পাতা:পাখীর কথা - সত্যচরণ লাহা.pdf/১৪৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দ্বিতীয় ভাগ
১২১

আনা হয়;—কৃত্রিম পিঞ্জর মধ্যে আবদ্ধ অবস্থায় না কি পাখীর পরমায়ু কমিয়া যায়। এরূপ মন্তব্য যে অনেকটা ভ্রমাত্মক—সে বিষয়ে পক্ষিপালকদিগের কিছু মাত্র সন্দেহ নাই। সাধারণতঃ পাখীর সুস্থতা ও অসুস্থতার পরিমাপ করা সহজ নহে; তবে অন্যান্য জীবজন্তুর মত অপেক্ষাকৃত দুর্ব্বল বিহঙ্গ প্রতিকূল পরিবেষ্টনীর মধ্যে রোগে ভুগিয়া থাকে; শুধু আবদ্ধ অবস্থায় নহে অবাধ স্বাধীনতার মধ্যেও তাহারা রোগের হাত হইতে নিষ্কৃতি লাভ করে না। জঙ্গলের মধ্যে যক্ষ্মারোগগ্রস্ত মুমূর্ষু পাখী দেখা যায়। একজন বিশেষজ্ঞ বলেন[১] যে পাখীর ব্যায়রামের বিষয় আলোচনা করিতে বসিয়া খাঁচার উপর দোষ দিলে চলিবে না; বরং খাঁচার মধ্যে মানবাবাসে পাখীর রোগ হইলে নানা উপায়ে তাহাকে রোগমুক্ত করিবার চেষ্টা করা হইয়া থাকে, অনেক সময়ে সে চেষ্টা সফল হয়। কিন্তু বনের মধ্যে রুগ্ন পাখীর মৃত্যু অবশ্যম্ভাবী। খাঁচায় পুরিবার চেষ্টায় প্রথম প্রথম যে পাখীর প্রাণসংশয় হয় না—এ কথা বলিতেছি না। গ্রীষ্মপ্রধান দেশের পাখীকে হিমপ্রধান দেশের মধ্যে পোষ মানাইরার চেষ্টা য়ুরোপে কিছুদিন হইতে চলিতেছে। ভারতবর্ষের এবং আফ্রিকার দুর্গা-টুনটুনি (Sunbird) কয়েক বৎসরের চেষ্টায় স্বনামখ্যাত মিঃ আলফেড্ এজ্‌রার বুদ্ধিকৌশলে ইংলণ্ডে নিরাময় হইয়া পিঞ্জরমধ্যে বাস করিতেছে। অন্যান্য পাখীর সম্বন্ধেও এই প্রকার ভূরি ভূরি দৃষ্টান্ত দিতে পারা যায়।

  1. “It must not be imagined that because birds are kept in cages or aviaries that that is the cause of disease attacking them at times. Oh dear no! Birds in their wild state are also attacked. I have picked up occasionally birds suffering from “going light”, too weak to fly off the ground * * * and this in the months of May and June, when their natural food was abundant.”—P. F. M. Galloway in the Avicultural Magazine, vol. ix, No. 6, p. 136.