পাতা:পাখীর কথা - সত্যচরণ লাহা.pdf/১৫৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

কালিদাস-সাহিত্যে বিহঙ্গপরিচয়

মেঘদূতের পক্ষিতত্ত্ব

 কালিদাসের যে কাব্যের রসে বিভোর হইয়া রবীন্দ্রনাথ উচ্ছ্বসিতকণ্ঠে প্রশ্ন করিয়াছেন—

“কবিবর, কবে কোন্ বিস্মৃত বরষে
কোন্ স্নিগ্ধ আষাঢ়ের প্রথম দিবসে
লিখেছিলে মেঘদূত? মেঘমন্দ্র শ্লোক
বিশ্বের বিরহী যত সকলের শোক
রাখিয়াছে আপনার অন্ধকার স্তরে
সঘন সঙ্গীত-মাঝে পুঞ্জীভূত করে’।”

 সেই বিশ্বের বিরহীর পুঞ্জীভূত বিরহব্যথার মধ্যে যদি কোন তত্ত্বজিজ্ঞাসু মানুষের জীবনরহস্য ছাড়িয়া পাখী প্রভৃতি ইতর জন্তুর জীবনবৃত্তান্ত সম্বন্ধে কোন তথ্য অবগত হইবার জন্য প্রয়াসী হন, তাহা হইলে তাঁহাকে “অরসিকেসু রসস্য নিবেদনম্” প্রভৃতি কথা স্মরণ করাইয়া দিয়া সাহিত্যরসিক সমালোচকবর্গ হয়ত কৃপার চক্ষে দেখিবেন। আমি কিন্তু সেই দুঃসাহসিক কার্য্যে ব্রতী হইয়াছি। গয়টে হইতে রবীন্দ্রনাথ পর্য্যন্ত বিশ্বসাহিত্যের মহারথগণ যে রসসাগরে ডুব দিয়া অমূল্য রত্নরাজিতে মানবসাহিত্য অলঙ্কৃত করিয়াছেন, আমি সেখানে তাঁহাদের পশ্চাতে সন্তরণ করিবার স্পর্দ্ধা করি না; রসসমুদ্রের উপকূলে উপবেশন করিয়া পারাবত, রাজহংস, চক্রবাকের আনন্দমুখর জীবনলীলা উপভোগ করিবার চেষ্টা করিব।