পাতা:পাখীর কথা - সত্যচরণ লাহা.pdf/১৫৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১২৬
পাখীর কথা

যস্যাস্তোয়ে কৃতবসতয়ো মানসং সন্নিকৃষ্টং
নাধ্যাস্যন্তি ব্যপগতশুচস্ত্বামপি প্রেক্ষ্য হংসাঃ॥

 মরকতশিলাবদ্ধ-সোপানমার্গ বাপীসমূহে অপর্য্যাপ্ত আহার পাইতেছে বলিয়া স্বচ্ছন্দবিচরণশীল হংসগণের মানসসরোবরে প্রস্থান করিবার বাসনা ক্ষীণ হইলেও একেবারে যে নাই, তাহা বলা যায় না। তবে গ্রীষ্মাতিশয্যে শুষ্কপ্রায় বাপীগুলি বর্ষারম্ভে বর্দ্ধিততোয় হইলে মানসসরোবরে যাইবার তত আবশ্যকতা নাই। এই নিমিত্ত বোধ হয় কবিবর লিখিয়াছেন—“হংসগণ আনন্দিত চিত্তে অবস্থান করিতেছে; মানসসরোবর সন্নিকৃষ্ট হইলেও তথায় যাইতে তাহারা প্রয়াসী নহে।”

 বৎসরের যে ঋতুতে আহার্য্যের অভাব হইবার সম্ভাবনা থাকে, সেই ঋতুর প্রাক্কালেই যাযাবর বিহঙ্গগণ যে স্থলে আপনাদিগের অভ্যস্ত উপাদেয় খাদ্যের স্বচ্ছলতা বর্ত্তমান আছে, তথায় প্রয়াণ করিয়া থাকে। পক্ষিতত্ত্ববিদ্ মিঃ ফ্রাঙ্ক ফিন্ লিখিয়াছেন—

 “Want of food is obviously the chief reason why birds of high elevations or high latitudes have to leave their haunts”[১]

 আরও একটা বড় কথা আছে। বৎসরের মধ্যে ঋতুবিশেষে যদি কোনও স্থানের জলবায়ু আহার্য্য প্রভৃতি সমগ্র পারিপার্শ্বিক অবস্থা কোনও পাখীর শাবকেৎপাদনের পক্ষে সম্পূর্ণভাবে অনুকূল হয়, তাহা হইলে সেই পাখীর সহজ সংস্কারলব্ধ জ্ঞান তাহাকে সেই স্থানে উপনীত করাইবে। আধুনিক পক্ষিতত্ত্ববিদ্‌গণ ইহা সবিশেষ লক্ষ্য করিয়াছেন। তাঁহারা আরও দেখিয়াছেন যে যদি কোনও উপায়ে পাখীর আহার বিহার প্রভৃতির প্রকৃষ্ট ব্যবস্থা কোথাও করা যায়, তাহা হইলে কতিপয়দিনস্থায়ী যাযাবর পাখীও হয়’ত তথায় দীর্ঘকালস্থায়ী হইয়া যায়;—অর্থাৎ migratory পাখীর কালক্রমে

  1. Bird Behaviour by Frank Finn, p. 208.