পাতা:পাখীর কথা - সত্যচরণ লাহা.pdf/১৫৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
তৃতীয় ভাগ
১২৭

resident হইয়া যাইবার প্রবণতা দৃষ্ট হয়। মিঃ ফ্রাঙ্ক ফিন্ স্পষ্টই বলিয়াছেন[১]

 “There is a strong tendency for migrants to settle down and form non-migratory local races.”

 এই আহার্য্য ও শাবকোৎপাদন-সমস্যা তাহাকে চঞ্চল করিলেও পরিচিত জনপদস্থ আবাসভূমি পরিত্যাগ করিয়া, গিরিদরী লঙ্ঘন করিয়া, অপরিচিত সুদূর প্রান্তর, সরোবর অথবা জলাভূমিসমূহ আহার্য্যবহুল হইলেও তথায় যাত্রা করিবার আয়াস স্বীকার করিতে পাখীকে কখন কখন পরাঙ্মুখ হইতে দেখা যায়।[২]

 বিসকিসলয় পাথেয়স্বরূপ করিয়া রাজহংসগণ কি নিমিত্ত কৈলাস পর্য্যন্ত সানন্দে মেঘদূতের সহযাত্রী হইবে, তাহা পাঠকবর্গ সহজে উপলব্ধি করিতে পারিবেন। বর্ষার বারিধারায় যখন আর্য্যাবর্ত্তের সমস্ত নদনদী উভয় কূল প্লাবিত করিয়া এই সমস্ত পক্ষীর আহার্য্য নষ্ট করিয়া ফেলিবার উপক্রম করে, তখন মানসসরোবরে ও তন্নিকটস্থ কৈলাস ও অন্যান্য পর্ব্বতমালায় তাহার উড়িয়া গিয়া নিরাপদ আশ্রয় লাভ করে। হিমালয়ের উত্তরে এই কৈলাসপর্ব্বত অবস্থিত; আর কৈলাসের পাদদেশে অগ্নিকোণে মানসসরোবর বিদ্যমান। এই কৈলাস ও তৎসন্নিকটবর্ত্তী স্থানসমূহ যে হংসজাতীয় পক্ষীর পক্ষে অন্ততঃ বৎসরের কয়েক মাস সর্ব্বাপেক্ষা উপযুক্ত আবাসস্থান, তাহা হিমালয়পর্য্যটনকারিগণের অনেকেই লক্ষ্য করিয়াছেন। এখানে তাহারা স্বচ্ছন্দে নীড় নির্ম্মাণ করিয়া অনুকূল পারিপার্শ্বিক অবস্থার

  1. Ibid, p. 219.
  2. স্বনামখ্যাত বৈজ্ঞানিক F. W. Headley পক্ষীর যাযাবরত্ব প্রসঙ্গে তাঁহার Structure and Life of Birds নামক পুস্তকের এক স্থলে লিখিয়াছেন যে, প্রতিকূল পারিপার্শ্বিক অবস্থার ভিতর হইতে পাখীগুলি বৎসরে বৎসরে স্থানান্তরে উড়িয়া যায়, শুধু যেগুলি মানুষঘেঁসা হইয়া পড়ে, তাহারা স্থান পরিত্যাগ করিতে চায় না—“Only those that are fed by their human friends remain.” Chapter XIV. p. 366.