পাতা:পাখীর কথা - সত্যচরণ লাহা.pdf/১৬০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৩০
পাখীর কথা

বিবরণ পাইলাম, তাহা হইতে বুঝিতে পারি যে, আসন্ন বর্ষায় ঐ সকল যাযাবর পাখী ভারতবর্ষের উত্তরপশ্চিমাংশে রাজপুতানায় এবং তন্নিকটবর্ত্তী স্থানসমূহে কেবলমাত্র কতিপয় দিনের নিমিত্ত অবস্থান করিবে, শীঘ্রই তাহাদিগকে কৈলাস এবং মানসবোবরাভিমুখে ক্রৌঞ্চরন্ধ্রের মধ্য দিয়া প্রস্থান করিতে হইবে। বিসকিসলয় তাহাদিগের একটি প্রধান ও প্রিয় খাদ্য।

 বিহঙ্গতত্ত্ববিদ্ পণ্ডিতমণ্ডলীর নিকটে এই হংসগুলি, বিশেষতঃ রাজহংসগুলি, ঠিক কোন্ জাতীয় বিহঙ্গ বলিয়া পরিচিত, এইখানে তাহার একটু আলোচনা আবশ্যক। মিঃ মুর্‌ক্রফ্‌ট্ মানসপর্য্যটনকালেরাজহংস সরোবরমধ্যে স্বচক্ষে যে সমস্ত হংস অবলোকন করিয়াছিলেন, তাহাদের তিনি বৃহৎ বন্য grey goose বলিয়া পরিচয় দিয়াছেন। মিঃ ব্লান্‌ফোর্ডের (W. T. Blandford) প্রসিদ্ধ পুস্তকে[১] Grey goose বা Grey Lag Goose সম্বন্ধে যে বিবরণ লিপিবদ্ধ আছে, তাহা হইতে জানিতে পারা যায় যে, তাহারা যাযাবর Anserinae জাতির অন্তর্ভুক্ত; অক্টোবর মাসের শেষ হইতে মার্চ্চ মাস পর্য্যন্ত পাঞ্জাব, সিন্ধু এবং ভারতের উত্তরপশ্চিম প্রদেশে তাহারা প্রচুর পরিমাণে দৃষ্ট হয়; চিল্কাহ্রদে এবং নর্ম্মদাসলিলে ক্রীড়া করিতে ইহাদিগকে প্রায় দেখা যায়। ইহাদিগের পুচ্ছ শুভ্র; পৃষ্ঠদেশে শ্বেতবর্ণের সহিত ভস্মবর্ণের সংমিশ্রণ লক্ষিত হয়। বক্ষঃস্থলে ও নিম্নদেশে সামান্য ধূসরবর্ণের সহিত শ্বেতবর্ণের মিশ্রণাধিক্য আছে। চঞ্চু ও পা সিত, ক্বচিৎ মাংসবর্ণ বা লাল। ইহাদের দেহে সামান্য ভস্ম বা ধূসরবর্ণের ছায়া বিদ্যমান থাকিলেও দূর হইতে তাহাদিগকে শুভ্রকায় দেখায়। ইহারা হিন্দুস্থানে রাজহংস নামে পরিচিত; তৃণ

  1. Fauna of British India, Birds, Vol. IV, pp. 416-417.