পাতা:পাখীর কথা - সত্যচরণ লাহা.pdf/১৬৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
তৃতীয় ভাগ
১৩৫

সম্ভবপর নহে। কেবল এক শ্রেণীর সারস পক্ষীকে সকল ঋতুতে পশ্চিমভারতে অবস্থান করিতে দেখা যায়; তাহারা যাযাবর নহে। অতএব কখনই তাহাদিগকে “কতিপয়দিনস্থায়ী হংস” বলা যায় না।

 সারসের অপর অভিধানার্থ এইরূপ,—“সারসো মৈথুনী কামী গোনর্দ্দো পুষ্করাহ্বয়ঃ”[১], “পুষ্করাহ্বস্তু সারসঃ[২]। ইহারা যথার্থ সারসপদবাচ্য, Grus পরিবারভুক্ত; হংস নহে। ইহাদিগের অবয়ব বৃহৎ, চঞ্চু অতিশয় দীর্ঘ। উল্লিখিত অভিধানার্থ হইতে ইহাদিগের প্রকৃতি বেশ বুঝা যায়। আধুনিক যুগের বিহঙ্গতত্ত্ববিদ্‌গণের পরিদর্শন এবং পর্য্যবেক্ষণের ফলে এই আভিধানিক অর্থ যে সারসজাতির বৈজ্ঞানিক পরিচয়, তাহা সম্যক্‌রূপে প্রমাণিত হইয়া গিয়াছে। পক্ষিদম্পতি সর্ব্বদা একত্রে থাকে বলিয়া ইহাদিগকে মৈথুনী আখ্যা দেওয়া হইয়াছে। উভয়ের মধ্যে অনুরাগাধিক্যবশতঃ উহারা কামী। উহাদিগের কণ্ঠস্বর বৃষবৎ কর্কশ বলিয়া তাহা গোনর্দ্দ। সরোবরের সহিত উহারা এত ঘনিষ্ঠভাবে সংশ্লিষ্ট যে, উহাদিগকে অভিধানকার পদ্মের সহিত এক পর্য্যায়ভুক্ত করিয়া যেন আখ্যা দিয়াছেন, পুষ্করাহ্বয়ঃ বা পুষ্করাহ্বঃ। মিঃ ব্লান্‌ফোর্ড লিখিয়াছেন,—

 “The Sarus is usually seen in pairs, each pair often accompanied by a young bird or occasionally by two, in open marshy ground or the borders of swamps or large tanks. * * * * They have a loud trumpet-like call. * * * * The Sarus pairs for life, and if one of a pair is killed, the survivor is said not unfrequently to pine and die”[৩].

সচরাচর যুগ্মাবস্থায় ইহাদিগকে বিচরণ করিতে দেখা যায়, কিন্তু সময়ে সময়ে ইহারা দল বাঁধিয়াও থাকে। সরোবরতটে বা জলাভূমির

  1. ইতি যাদবঃ।
  2. ইত্যময়ঃ।
  3. Fauna of British India, Birds, Vol. IV, p. 188.