পাতা:পাখীর কথা - সত্যচরণ লাহা.pdf/২০৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
তৃতীয় ভাগ
১৭৫

বৈজ্ঞানিক হিসাবে এই উক্তির সাহায্যে আমরা একপদও অগ্রসর হইতে পারিলাম না। এতগুলি অভিধান দেখিয়া আমাদের স্বতঃই একটা প্রবৃত্তি জন্মে যে, কারণ্ডব হংসবিশেষ; তাহাতে সন্দেহের কারণ থাকা উচিত নহে। প্রায়ই ’ত তাহাকে কাদম্বের সঙ্গে সংস্কৃত-সাহিত্যে প্রকৃতিবর্ণনার মধ্যে একত্র দেখা যায়; অভিধানগুলিতেও তাহার ছাপ পড়িয়াছে। তর্কের খাতিরে যদি মানিয়া লওয়া যায় যে, কারণ্ডব হংসবিশেষ, তাহা হইলে সেই হংসের প্রকারভেদ করিবার চেষ্টা করিয়া দেখিলে ক্ষতি কি? সুশ্রুতসংহিতার টীকাকার ডল্লনাচার্য্য মিশ্র কারণ্ডবের দুই প্রকার বর্ণনা দিয়াছেন,—কারণ্ডবঃ শুক্লহংসভেদোঽল্পঃ অর্থাৎ কারণ্ডব শুক্লহংস হইতে ঈষৎ ভিন্ন। এস্থলে অনুমান করিয়া লওয়া যাইতে পারে যে, এই ভেদটুকু কেবলমাত্র দেহের বর্ণসম্বন্ধে; শুক্লহংস নয়, অল্প ভেদ আছে। তবে কি Grey Goose পর্য্যায়ে ফেলা যাইতে পারে? অথবা ইহাকে কি শুক্লহংসভেদোঽল্প anser indicus শ্রেণীর মধ্যে দাঁড় করাইব? ইহারা উভয়েই সাদা রংএর কাছাকাছি যায়;—grey goose বা anser cinereus প্রায় ধূসরত্বে উপনীত হইয়াছে, আর anser indicusএর পতত্র ও মাথার দিক্‌টা খুব সাদা, বাকি দেহের বর্ণে কিছু লাল্‌চে ও কাল রংয়ের ভাব দেখা যায়। এইরূপ বর্ণনা করিয়া আচার্য্য ডল্লনমিশ্র ক্ষান্ত হন নাই। তিনি এই বিবরণটি কোথা হইতে উদ্ধৃত করিয়াছেন জানি না, কিন্তু লিখিতেছেন—উক্তঞ্চ “কারণ্ডবঃ কাকবক্ত্রো দীর্ঘাঙ্ঘ্রিঃ কৃষ্ণবর্ণভাক্” ইতি; অর্থাৎ ইহার কাকের ন্যায় মুখ, পা দীর্ঘ, বর্ণ কালো। অমরকোষের টীকাকার মহেশ্বরও লিখিয়াছেন—অয়ং কাকতুণ্ডো দীর্ঘপাদঃ কৃষ্ণবর্ণঃ। এখন প্রশ্ন এই যে, এই কাকের মত মুখ, লম্বা লম্বা পা ও কালো রং হংসজাতীয় কোনও পাথীর মধ্যে দেখা যায় কি? Anseres পরিবারভুক্ত কোনও হংসের পা ও ঠোঁট উক্ত বর্ণনার সহিত মিলিতে পারে না। তবে কি