পাতা:পাখীর কথা - সত্যচরণ লাহা.pdf/২২৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

নাটকাবলী

(বিক্রমোর্ব্বশী)

 মহাকবি কালিদাসের দুই একখানি কাব্যে যে সকল পাখীর কথা আসিয়া পড়িয়াছে, তাহা লইয়া বৈজ্ঞানিক হিসাবে ইদানীং কিঞ্চিৎ আলোচনা করিবার চেষ্টা করিয়াছি। সংস্কৃত কাব্য-সাহিত্য হইতে বাছিয়া বাছিয়া, কেবলমাত্র পাখীগুলিকে তুলিয়া লইয়া, তাহাদিগকে Ornithologyর দিক হইতে আলোচনার বিষয়ীভূত করিয়া আমি যে শুধু পাশ্চাত্য তত্ত্বজিজ্ঞাসুর পথ অনুসরণ করিতেছি, তাহা নহে; আমি পদে পদে অনুভব করিতেছি যে, বহুশত বর্ষ পূর্ব্বে মহাকবি-বর্ণিত ভারতবর্ষের এই পাখীগুলিকে আমাদের আজকালের পরিচিত পাখীগুলির সহিত মিলাইয়া তাহাদিগকে আধুনিক বৈজ্ঞানিক ব্যবস্থা মত যথাযথ শ্রেণীবদ্ধ করা কিরূপ কষ্টসাধ্য ব্যাপার। অথচ আমাদের প্রাচীন কাব্য-সাহিত্যের উপর চারি দিক্ হইতে রশ্মিপাত হওয়া উচিত, নহিলে আলোকে-আঁধারে কাব্যের সমস্ত সৌন্দর্য্য পাঠকের সম্মুখে ফুটিয়া উঠিতে পারে না; তাই ব্যাপারটা যতই কষ্টসাধ্য হউক, এক বার ভাল করিয়া চেষ্টা করিয়া দেখিতে হইবে, আমাদের রস-সাহিত্যে এই পাখীগুলির বর্ণনা নিতান্ত অবৈজ্ঞানিক ও অপ্রাসঙ্গিক হইয়াছে কি না। কাব্যামোদী ব্যক্তিমাত্রই হংস, পারাবত, পিক, চাতক, শিখী, কাদম্ব, কারণ্ডব, শুক প্রভৃতি পাখীগুলির ছবি সাহিত্যের স্তরে স্তরে দেখিতে পান। মানুষের সুখ-দুঃখের সহিত তাহাদের ক্ষুদ্র জীবনের ইতিহাস যেন গ্রথিত হইয়া যায়। দুঃখের বিষয় এই যে, যে বিহঙ্গজাতি আমাদের প্রাচীন সাহিত্যকুঞ্জে মানবের এত নিকটে আসিয়া