পাতা:পাখীর কথা - সত্যচরণ লাহা.pdf/২৪১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
তৃতীয় ভাগ
২০৭

জ্যোৎস্না যেমন মেঘরাজিতে অবরুদ্ধ হয়, মালবিকা এখন সেইরূপ হইয়াছেন; তাঁহার দর্শনলাভ এখন রাণী ধারিণীর অনুমতিসাপেক্ষ। শ্যেন পক্ষী যেমন প্রাণিবধস্থানের নিকটে আমিষলোভে বিচরণ করে, মালবিকারূপ আমিষলোভে লুব্ধ হইয়া আপনিও সেইরূপ করিতেছেন।”

 তৃতীয় অঙ্কে রাজা ও বিদূষক একটি উদ্যানে প্রবেশ করিলেন। তখন সেই প্রমোদবন যেন বায়ুভরে ঈষৎ বিকম্পিত পল্লবরূপ অঙ্গুলিসঙ্কেতে উৎকণ্ঠিত রাজাকে ত্বরান্বিত করিতেছে। বায়ুস্পর্শ-সুখ অনুভব করিয়া তিনি বলিলেন—“নিশ্চয়ই বসন্তঋতু আবির্ভূত হইয়াছে। সখে! দেখ,

আমত্তানাং শ্রবণসুভগৈঃ কূজিতৈঃ কোকিলানাং
সানুক্রোশং মনসিজরুজঃ সহ্যতাং পৃচ্ছতেব।

উন্মত্ত কোকিলেরা শ্রবণসুখকর রব করাতে বোধ হইতেছে যেন বসন্ত সদয়ভাবে আমাকে জিজ্ঞাসা করিতেছে ইত্যাদি * * *”।

 এমন সময়ে মালবিকা সেই উদ্যানে প্রবেশ করিল। রাজা বয়স্যকে বলিলেন,—এখন আমি জীবনধারণ করিতে সমর্থ হইব। সারস পক্ষীর উচ্চধ্বনি শ্রবণ করিয়া তরুরাজি-সমাবৃত নদী নিকটবর্ত্তী বুঝিয়া পথিকের হৃদয় যেমন আনন্দে উৎফুল্ল হইয়া উঠে, তোমার মুখে প্রিয়তমা সমীপগতা শুনিয়া আমার অবসন্ন চিত্তও সেইরূপ উৎফুল্ল হইয়া উঠিয়াছে।

 মালবিকার সখী বকুলাবলিকা আসিয়া উপস্থিত হইল। রাজা ও মালবিকার আলাপ পরিচয়ের মাঝখানে সহসা কুপিতা রাণী ইরাবতীর আবির্ভাব; একটা মহা গোলমালের মধ্যে তৃতীয় অঙ্কের যবনিকা পড়িয়া গেল।

 চতুর্থ অঙ্কের প্রারম্ভে রাজা দুই একটি কথার পর বয়স্যকে মালবিকার সংবাদ জিজ্ঞাসা করিলেন। বিদূষক উত্তর দিলেন, ‘বিড়ালে