পাতা:পাখীর কথা - সত্যচরণ লাহা.pdf/২৪৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
তৃতীয় ভাগ
২১৩

তাহাতে বিদ্রূপ করিয়া বলিলেন—“হে গৌতমি! তপোবনে লালিত হইয়াছেন বলিয়া যে ইনি ছলনা জানেন না, তাহা না হইতেও পারে; কারণ, মানুষেতর জীবের স্ত্রীজাতির মধ্যে যখন অশিক্ষিতপটুত্ব দেখা যায়, তখন বুদ্ধিবৃত্তিসম্পন্না নারীর মধ্যে যে তাহা প্রকটিত হইবে, তাহাতে আশ্চর্য্য কি?

স্ত্রীণামশিক্ষিতপটুত্ত্বমমানুষীষু
সংদৃশ্যতে কিমুত যাঃ প্রতিবোধবত্যঃ।
প্রাগন্তরিক্ষগমনাৎ স্বমপত্যজাত-
মন্যৈর্দ্বিজৈঃ পরভৃতাঃ খলু পোষয়ন্তি॥

—এই নিমিত্তই আকাশমার্গে উড়িয়া যাইবার পূর্ব্বে পরভৃতা স্বীয় অপত্যগুলি অন্য পক্ষীর দ্বারা পোষণের ব্যবস্থা করিয়া থাকে”।

 নাটকের ষষ্ঠ অঙ্কের সূচনায় রাজপুরুষেরা ধীবরের নিকটে রাজনামাঙ্কিত অঙ্গুরীয়ক দেখিয়া তাহার প্রতি ভয় প্রদর্শন করিয়া বলিল—“অরে চোর! তোর দণ্ডবিধানার্থ রাজ-আজ্ঞা বহন করিয়া আমাদের স্বামী আসিতেছেন। এখন তুই গৃধ্র-বলিই হইবি অথবা কুক্কুরের মুখে যাইবি।” এদিকে চূতমুকুল অবলোকন করিয়া পরভৃতিকা ও মধুকরিকা পরিচারিকাদ্বয় বসন্তের আগমনে উৎফুল্ল হইয়াছে। মধুকরিকা জিজ্ঞাসা করিল—“লো পরভৃতিকে! তুই আপনাআপনি কি গুন্‌গুন্ করিতেছিস্?” সে উত্তর করিল—“চূতমুকুল দেখিয়া পরভৃতিকা উন্মত্তাই হইয়া থাকে।” উভয়ের কথোপকথনের মাঝখানে সহসা কঞ্চুকী আসিয়া তাহাদিগকে তিরস্কার করিয়া বলিল—“রাজা বসন্তোৎসব করিতে নিষেধ করিয়াছেন। বাসন্তিক তরুগুলি এবং সেই তরুগুলিকে আশ্রয় করিয়া যে পাখীগুলি থাকে, তাহারা পর্য্যন্ত রাজার আজ্ঞা পালন করিতেছে, আর তোরা দুইজন ইহার কিছুই জানিস্ না?—