পাতা:পাখীর কথা - সত্যচরণ লাহা.pdf/২৫৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২২২
পাখীর কথা

 Flamingo সিতাবয়ব কি না, এই প্রশ্নের নিষ্পত্তি হইলে কবিবর্ণিত রাজহংসের সহিত ইহার জাতিগত ঐক্য সংস্থাপনের কোনও অন্তরায় থাকে না। কারণ flamingo যে লোহিতচঞ্চুচরণ, সে বিষয়ে মতদ্বৈধ নাই। যাঁহারা সতর্কভাবে এই পাখীটিকে নিরীক্ষণ করিয়াছেন, তাঁহারা লক্ষ্য করিয়া থাকিবেন যে ইহার দেহের বর্ণ প্রধানতঃ শাদা, তবে বর্ণে ঈষৎ গোলাপী আভা বিদ্যমান আছে। শাবকদিগের দেহের বর্ণে কিন্তু এই গোলাপী আভা নাই বলিলেই চলে। সাধারণ পর্য্যবেক্ষণের ফলে এই পর্য্যন্ত সকলেই বলিতে পাবেন। এখন প্রশ্ন এই যে, তাহা হইলে ইহাকে সিতাবয়ব বলা চলে কি না?

 “সিত” শব্দের আভিধানিক অর্থ বিচার করিয়া দেখিলে সহজেই প্রতীতি জন্মে যে, ইহা শুক্ল কিংবা শ্বেতের পর্য্যায়ভুক্ত হইয়াও, শুক্ল ও শ্বেত বলিলে যাহা বুঝায়, ইহাতে তাহার কিছু ব্যতিক্রম আছে। শুক্ল ও শ্বেত একেবারে শাদা;—অভিধানকার বলিতেছেন ‘রক্তেতর’। শব্দার্ণব-রচয়িতা স্পষ্ট করিয়া বলিতেছেন যে, সিত রংটি—কদলীকুসুমোপম, কলার ফুলের মত। এই কলার ফুল যে একেবারে সম্পূর্ণ শাদা নয়, একথা বাঙ্গালী পাঠকবর্গকে অবশ্যই বুঝাইতে হইবে না; শাদার সঙ্গে অন্য রঙের সংমিশ্রন আছে। ‘সিত’ শব্দের আভিধানিক তাৎপর্য্যেও এই বিভিন্ন বর্ণ-সংমিশ্রণের আভাস পাওয়া যায়; কোথাও শ্বেতের সহিত পীত, কোথাও বা শ্বেতের সহিত কৃষ্ণের সম্পর্ক থাকিলেও, ‘সিত’ শব্দ বা তৎপর্য্যায়ক কতকগুলি শব্দের প্রয়োগ হইয়া থাকে। যখন শ্বেতের সহিত কৃষ্ণ মিলিল, তখন সেই সিতকে অর্জ্জুন আখ্যা দেওয়া যাইতে পারে। যখন শাদার সহিত লাল মিশিল, তখন তাহা সিতপর্য্যায়ভুক্ত শ্যেত দাঁড়াইল;—এই শ্যেত শব্দটি আমরা “খাঁচার পাখী” প্রসঙ্গে বৈদিক সারিঃশ্যেতায় পাইয়াছি। ম্যাক্‌ডোনেলের অভিধানে