পাতা:পাখীর কথা - সত্যচরণ লাহা.pdf/২৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
প্রথম ভাগ
১৩

 সর্ব্বপ্রথমে মানবজাতির পক্ষিপালন এই প্রকার। কালে আমাদের নয়নরঞ্জন ও চিত্তবিনোদনের নিমিত্ত পাখীরা পিঞ্জরাবদ্ধ হয়। বর্ত্তমান যুগে পাশ্চাত্য জগতে পক্ষিপালনের উদ্দেশ্য অতিশয় উচ্চতর। বৈজ্ঞানিক তত্ত্বনিরূপণে পক্ষিপালন যে কি পরিমাণে সহায়তা করে, তাহা কেবল প্রাণিতত্ত্ববিৎ পাশ্চাত্য পণ্ডিতগণই বিদিত আছেন। ইঁহারা বহুবর্ষব্যাপী পরিশ্রম ও অধ্যবসায়ের ফলে পক্ষিজাতির প্রাকৃত জীবন সূক্ষ্মরূপেপক্ষিবিজ্ঞানের অভিব্যক্তি নিরীক্ষণ এবং অনুশীলন করিয়া যে সকল তথ্যে উপনীত হইয়াছেন, ঐ তথ্য বা সিদ্ধান্তসমূহ কালক্রমে পরিপুষ্ট ও পরিবর্দ্ধিত হইয়া পক্ষিবিজ্ঞান বা Ornithology নামে অভিহিত হইয়াছে। সরিসৃপবংশ হইতে পক্ষিজাতির উদ্ভব কিনা, উহাদের প্রত্যেক অঙ্গপ্রত্যঙ্গ, গতিবিধি, বর্ণ ও বর্ণশাবল্য, শ্রেণীগত পার্থক্য ও স্বভাববৈচিত্র্য, নীড়নির্ম্মাণ ও শাবক প্রতিপালনকুশলতা, উহাদের খাদ্য-সামগ্রী প্রভৃতি যাবতীয় সূক্ষ্মতত্ত্বের গবেষণাই পক্ষিবিজ্ঞানের মূল উদ্দেশ্য। এই উদ্দেশ্য সাধনার্থ পাশ্চাত্য বৈজ্ঞানিকগণ কেবলমাত্র বিহঙ্গজাতির প্রাকৃত জীবনের তথ্যালোচনা করিয়াই ক্ষান্ত হন নাই; তাঁহারা বহুবিধ পাখী খাঁচায় পুষিয়া উহাদের আবদ্ধ জীবনের ধারা পুঙ্খানুপুঙ্খরূপে লক্ষ্য করিতেছেন। এইরূপে বহু নূতন তথ্যের আবিষ্কার দ্বারা বিজ্ঞানশাস্ত্র আরও সমৃদ্ধিশালী হইয়া উঠিতেছে।

 প্রাচ্যজগতে পক্ষীর আবদ্ধ জীবন লইয়া কতকটা নাড়াচাড়া যে না হইয়াছে তাহা নহে। চীন ও জাপানবাসীদিগের পক্ষিপালন-দক্ষতা অতিশয় আশ্চর্য্যজনক। উহাদের অদ্ভুত বুদ্ধিকৌশলেপক্ষিপালনে জাপানবাসীর প্রচেষ্টা কতিপয় নূতনপ্রকার পক্ষীর আবির্ভাব (বা আবিষ্কার) হইয়াছে; যথা, কুক্কুট জাতীয় বিহঙ্গের মধ্যে জাপানী বেণ্টাম (Bantam)[১]জগদ্‌-

  1. জাপানবাসীদিগের বহুবর্ষ ধরিয়া কুক্কুট জাতীয় ভিন্ন-শ্রেণীর পক্ষি-মিথুনগুলির