পাতা:পাখীর কথা - সত্যচরণ লাহা.pdf/৩০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৪
পাখীর কথা

বিখ্যাত লম্বপুচ্ছ মোরগ (Longtailed fowls)[১]; এবং মুনিয়া (munia) জাতীয় ক্ষুদ্র পক্ষীদের ভিতর সাদা জাভাচড়াই (Munia Oryzivora)[২] এবং বেঙ্গলী (Uroloncha Acuticauda)[৩]। উহারা পিঞ্জরাবদ্ধ পক্ষীগুলিকে এত অধিক যত্নের সহিত পালন করে যে, তাহারা আপনাদের আবদ্ধ জীবনের ক্লেশ ভুলিয়া গিয়া স্বচ্ছন্দমনে পিঞ্জরমধ্যে কালাতিপাত করিতে থাকে। এমন কি পক্ষিমিথুন খাঁচায় ডিম্ব প্রসব এবং সন্তান উৎপাদন করিয়া আপনাদিগের জীবন আরও সুখময় করিয়া তোলে। জাপানবাসীদিগের বহু চেষ্টার ফলে মুনিয়া (munia) জাতীয় দুইটি ভিন্ন শ্রেণীর বিহঙ্গ হইতে যে ‘বেঙ্গলী’ (Uroloncha Acuticauda) উৎপন্ন হইয়াছে, সে বিষয়ে সন্দেহ নাই। ডাক্তার ব্যট্‌লার বলেন[৪]— এই মনোমোহকর ক্ষুদ্র উৎপাদিকাশক্তি-বিশিষ্ট বর্ণসঙ্কর পক্ষী

    নির্ব্বাচন, যথাযথ সংস্থাপন ও পোষণের ফলে বেণ্টামের আবিষ্কার হইয়াছে। ইহার বৈশিষ্ট্য এই যে, বেণ্টামের পাদদ্বয় অতিশয় ক্ষুদ্র এবং মস্তকের শিখা দীর্ঘ।

  1. লম্বপুচ্ছ মোরগের পুচ্ছদেশ কিরূপে লম্বিত হইল, তদ্বিষয়ে পর্য্যালোচনা করিয়া ক্যনিংহাম্ (Mr. J. T. Cunningham) সাহেব Proceedings of the Zoological Society (1903) তে তাঁহার সিদ্ধান্ত প্রকাশিত করিয়া বলেন যে, উক্ত মোরগের পুচ্ছদেশে নবোদ্গত পতত্রগুলির মনুষ্য কর্ত্তৃক আকর্ষণ বিকর্ষণের ফলে এরূপ লম্বপুচ্ছের আবির্ভাব হইয়াছে। কিন্তু ফ্রাঙ্ক ফিন্ সাহেব এরূপ সিদ্ধান্তে সন্দিহান হইয়া বলেন যে, কেবল কুক্কুট-মিথুনের নির্ব্বাচনের ফলে ইহা সঙ্ঘটিত হইয়াছে; কারণ বিনা হস্তক্ষেপে লম্বপুচ্ছের উদ্গমাধিক্য দৃষ্ট হয়। Vide Ornithological and other Oddities by Frank Finn, page 189.
  2. জাভা প্রদেশ (বা যবদ্বীপ) ইহার অদিম উৎপত্তিস্থান বলিয়া ইহার নাম Java Sparrow। অধুনা পৃথিবীর প্রায় সকল দেশে ইহা সঞ্চারিত হইয়াছে। উক্ত পক্ষী বঙ্গদেশে ‘রামগোরা’ নামে অভিহিত হয়।
  3. সাধারণতঃ এই পক্ষী ‘জাপান মুনিয়া’ বা জাপানী ‘ম্যানাকিন্’ (manakin) আখ্যা পাইয়া থাকে। ইংল্যাণ্ড প্রদেশে ইহা ‘বেঙ্গলী’ নামে পরিচিত।
  4. Foreign Finches in Captivity by Dr. A. G. Butler, pp. 212-213.