পাতা:পাখীর কথা - সত্যচরণ লাহা.pdf/৫৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
প্রথম ভাগ
৩৫

প্রকার পক্ষী দৃষ্ট হয়, যাহাদিগের রুচির তারতম্যপ্রযুক্ত খাদ্যাদির পার্থক্য পরিলক্ষিত হইয়া থাকে। যদিও অধিকাংশ পক্ষী কীট-পতঙ্গ ভক্ষণ করে,রুচিবিচার তথাপি কোন বিশিষ্ট খাদ্যের উপর তাহাদিগের অধিকতর ঝোঁক দেখা যায়। বুলবুলজাতীয় পক্ষিগণ কীটাদি ভোজন করিলেও তাহারা সুপক্ব ফলের বিশেষ পক্ষপাতী; কোকিল, “বসন্ত,” “হরেওয়া” প্রভৃতি কতিপয় পক্ষীও সুপক্ব ফল খাইতে বড়ই ভালবাসে। দুর্গাটুনটুনি এবং এই জাতীয় ক্ষুদ্রকায় পক্ষী প্রজাপতি প্রভৃতি ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কীট পতঙ্গ ভক্ষণ করিলেও মধুমক্ষিকার ন্যায় মধুপানের তীব্র বাসনা হৃদয়ে পোষণ করিয়া থাকে, এবং বিধিবিনির্ম্মিত সুপটু চঞ্চপুটের সাহায্যে সরস কুসুম-নিচয় হইতে মধুপান করিয়া আপনাদিগের দেহের পুষ্টিসাধন করে। কতিপয় পক্ষী বীজাণুভোজী হইলেও তাহাদিগকে সময়ে সময়ে কীট-পতঙ্গ ভোজন করিতে দেখা যায়। কীটপতঙ্গপ্রিয় কোন কোন জাতীয় বিহঙ্গ উদর-তৃপ্তির নিমিত্ত ক্রমাগত ক্ষুদ্র কীটাদির বিনাশ সাধন পূর্ব্বক এতই হিংস্রভাবাপন্ন হইয়া উঠে যে, গৃধ্র প্রভৃতি মাংসাশী পক্ষীর ন্যায় অপেক্ষাকৃত ক্ষুদ্রকায় ক্ষীণপ্রাণ বিহঙ্গগণকে হত্যা করিতে উদ্যত হয়। “মাছরাঙা” জাতীয় পাখীগুলি যদিও কীটাদি ভক্ষণ করে, তথাপি মৎস্যের উপর উহাদিগের অসক্তি বিশেষরূপে লক্ষিত হয়। এই সকল ভিন্নরুচি পক্ষীকে একত্র এক গৃহমধ্যে রক্ষা করা কতদূর সঙ্গত এবং সম্ভবপর, তাহা নির্ণয় করা একমাত্র অভিজ্ঞানসাপেক্ষ। মোটামুটি বলিতে গেলে, তুল্যাবয়ব এবং সমানস্বভাবের পাখীগুলিকে একত্র রক্ষা করিলে বিপদ্‌পাতের অতি অল্পই সম্ভাবনা। উল্লিখিত হিংস্রভাবাপন্ন কীটপতঙ্গভোজী বিহঙ্গগণকে অপরাপর নিরীহ পক্ষিসমূহের সহিত রক্ষা করা কখনই বিধেয় নহে। প্রায় দেখা যায় যে, পক্ষিপালকগণ অবয়ব এবং স্বভাবের সামঞ্জস্য সত্ত্বেও বীজাণুভোজী এবং কীটপতঙ্গভক্ষণকারী পক্ষিগণের মধ্যে পরস্পর সবিশেষ পার্থক্য-