পাতা:পাগলা ঝোরা - ললিতকুমার শর্ম্মা.pdf/২২৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

RY দর্পহারী মধুসূদন ত্রিযামায় এক নিমিষের নিমিত্তও সর্বসন্তাপহারিণী নিদ্রার ক্ৰোড়ে শান্তিলাভ করিতে পারিলেন না । ক্রমে রাত্রি অবসানপ্ৰায় হইল। উষার অস্পষ্ট আলোকে রাজা দেখিতে পাইলেন, একজন কৃষক দ্রব্যসম্ভারপূর্ণ গোযান চালনা করিয়া রাজপথে অগ্রসর হইতেছে। জিজ্ঞাসায় জানিলেন, কৃষক কৃষিজাত ফলমূলবিক্রয়ার্থ রাজধানীর অভিমুখে গমন করিতেছে। রাত্রির অন্ধকারে এবং শারীরিক ও মানসিক কষ্টে রাজা দিগভ্ৰান্ত হইয়াছিলেন, এক্ষণে কৃষকের বাক্যে অবগত হইলেন যে, রাজধানী অনতিদূরে অবস্থিত। রাজা তখন কাতরবাক্যে কৃষককে অনুরোধ করিলেন,-“আমি অনাহারে ও পথিশ্রমে নিতান্ত দুৰ্ব্বল, তুমি আমাকে রাজপুরীর সিংহদ্বার পর্যন্ত শকটে আরোহণ করাইয়া লইয়া যাও । একজন রাজ-কৰ্ম্মচারী আমার পরমাত্মীয়, তিনি তোমাকে যথেষ্ট পুরস্কৃত করিবেন।” সকলেই অবিশ্বাস করিতেছে লক্ষ্য করিয়া তিনি কৃষকের নিকট নিজের প্রকৃত পরিচয় দিলেন না । সরলপ্রকৃতি কৃষক প্ৰতিশ্রুত পুরস্কার প্রত্যাখ্যান করিয়া, বিপন্ন পথিকের প্রতি কৃপাপরবশ হইয়া, তাঁহাকে শকটে দ্রব্যসম্ভারের উপর শয়ন করাইয়া এবং কৃষিজাত কিঞ্চিৎপরিমাণ ফলমূল প্ৰদান করিয়া পরিতৃপ্ত করিল। যথাসময়ে রাজপুরীর নিকটবৰ্ত্তী হইলে রাজা ধীরে ধীরে গোযান হইতে অবতরণানন্তর বার বার কৃষকের নিকট কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করিলেন, এবং ভবিষ্যতে তাহাকে যথোচিত পুরস্কৃত করিবেন, এই সঙ্কল্প করিয়া তাহার নামধাম জিজ্ঞাসা করিয়া রাখিলেন। রাজা বিবেচনা করিয়াছিলেন, তিনি অন্যত্র বিড়ম্বিত হইলেও রাজপ্রাসাদে প্রবেশমাত্ৰই দৌবারিকগণ তাঁহাকে চিনিতে পরিবে ও সসম্রামে অভিবাদন করিবে । তিনি ইহাও কল্পনা করিয়াছিলেন যে, এক অহোরাত্র তিনি উপস্থিত না থাকাতে রাজপুরী বিষাদকালিমায় পরিব্যাপ্ত