পাতা:পাগলা ঝোরা - ললিতকুমার শর্ম্মা.pdf/৫৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8 ধৰ্ম্মে মতি সুযোগ ঘটিল। পূর্বেই বলিয়াছি, তীৰ্থবাসকালে ধৰ্ম্মাচরণের সঙ্গে সঙ্গে কখনও শরীর-পোষণে শৈথিল্য প্রকাশ করি নাই ; আত্মার তুষ্টি ও দেহের পুষ্টি যে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত, তাহা শাস্ত্ৰ হইতেই শিক্ষা করিয়াছিলাম। সুতরাং কাশীতে গিয়া যেমন নানা দেবস্থানের অন্বেষণ করিতে লাগিলাম, তেমনই বহুবিধ রসনাতৃপ্তিকর খাদ্যপেয়েরও সন্ধান লইতে ছাড়িলাম না। একদিকে শিব, কালী, বিষ্ণু, সূৰ্য্য, কাৰ্ত্তিক, গণেশ, লক্ষ্মী, শীতলা, ষষ্ঠ প্রভৃতি দেবদেবী-দর্শনের জন্য এবং অপরদিকে নানখাতাই, ঘিওর, পুরী, কচুরী, নিমকী হইতে চমচম, পানতোয়া, ক্ষীরমোহন, আবার-খাবো প্ৰভৃতি আস্বাদনের জন্য সমান উৎসাহী হইলাম। পাঠকসম্প্রদায়ের ধৰ্ম্মপ্রবৃত্তির উন্নতিকল্পে নিয়ে বিস্তারিত বিবরণ দিতেছি। এইস্থলে একটি কথা বলিয়া রাখি। আজকাল অনেকে কাশীধাম ও অন্যান্য তীর্থ-সম্বন্ধে পুস্তক ছাপাইতেছেন। কিন্তু কোথায় কিরূপ খাদ্যদ্রব্য পাওয়া যায়, তাহ কেহই লেখেন না। এ সকল আবশ্যকীয় কথা লিখিলে যে পাঠকদিগের ধৰ্ম্মপ্রবৃত্তি জাগরিত হয়, এটুকু তাহারা বুঝেন না। আমার এ ক্ষুদ্র প্রবন্ধের অন্য যে দোেষই থাকুক, এ বিষয়ে কোন ত্রুটি নাই। কাশীধামে পৌঁছিয়াই গঙ্গাস্নানান্তে বিশ্বেশ্বর-দর্শনে যাত্ৰা করিলাম। দর্শনান্তে বিশ্বেশ্বর-মাহাত্ম্য প্ৰণিধান করিলাম ; পরন্তু বিশ্বেশ্বরের গলির দধি ও তৎসন্নিহিত কচুরী-গলির ‘খাবার’ উদারস্থ করিয়া ধন্য হইলাম। বুঝিলাম, শিবভক্তের তিন বাবার মধ্যে বাবা বিশ্বনাথই সবার সেরা । মা অন্নপূর্ণার দর্শনে জন্ম সার্থক করিলাম, আবার তাহার প্রসাদ পায়সান্ন ভোজন করিয়াও পরিতৃপ্ত হইলাম। ইহা মহাপ্ৰসাদ না হইলেও ফেলনা নহে। দেওয়ালীর দিনে মাএর অন্নকূট নানারূপ রসনা-তৃপ্তিকর চৰ্ব্বচুম্বালেহ্যপেয় দ্রব্যও লোভনীয় বস্তু। তদুপলক্ষে মাকে কিঞ্চিৎ প্ৰণামী দিয়া ঘূতপাক খাদ্য, মিষ্টান্ন প্রভৃতির স্বাদগ্ৰহণ করিয়া ভক্তিরসে পরিপ্লুত হইয়াছি।