পাতা:পাগলা ঝোরা - ললিতকুমার শর্ম্মা.pdf/৫৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8ଳ ধৰ্ম্মে মতি শাক্তবংশে জন্মিলেও বিষ্ণুমূৰ্ত্তির প্রতি আমার বিরাগ-বিদ্বেষ নাই। সাধনাক্ষেত্রে পদক্ষেপ করিয়াই, হৃদয় হইতে বংশগত সঙ্কীর্ণ সাম্প্রদায়িকতা দূর করিয়া উদারমতাবলম্বী হইয়াছি, শ্যাম ও শ্যামার অভেদ জানিয়াছি। আর ইহাও বুঝিয়াছি যে, মৎস্য-মাংস রুচিকর ও পুষ্টিকর আহাৰ্য্য হইলেও, মধ্যে-মধ্যে মুখ বদলাইবার জন্য, ক্ষীর-সর-ছানা-নানী-মাখন মন্দ জিনিশ নহে। সুতরাং বিন্দুমাধব, আদিকেশব, গোপাল প্ৰভৃতি বিগ্ৰহ সাগ্রহে দর্শন করিয়াছি, এবং দক্ষিণার বিনিময়ে গোপালজীর দেবভোগ্য ভোগ আহরণ করিয়া কৃতাৰ্থ হইয়াছি। অবিমুক্ত-বারাণসী কাশীধামের এমনই মাহাত্ম্য যে, শুধু প্ৰসাদ কেন, মাছতরকারী ফলমূল পৰ্যন্ত এখানে সুলভ ও অপৰ্য্যাপ্ত। তবে পূজার ছুটীতে বহু সৌধীন তীর্থযাত্রীর ভিড়ে দ্রব্যাদি দুৰ্ম্মতুল্য হয়, এবং এ সময়ে প্রধান-প্রধান তরকারী ও ফলমূল তেমন উঠে না । ইহাতে দৈহিক ও সঙ্গে-সঙ্গে আধ্যাত্মিক উন্নতির ( উভয়ে নিত্যসম্বদ্ধ ) ব্যাঘাত ঘটে বলিয়া বড়দিনের ছুটিতে বিশ্বেশ্বর-দৰ্শন-লোলুপ হইয়া আবার সেখানে ছুটিয়াছিলাম এবং তঁহার কৃপায় রামনগরের মূলা, বেগুন, কপি, কড়াইসুটি, কুল, পেয়ারা ধ্বংস করিয়া সুস্থশরীরে খোসমেজাজে বাহাল তবিয়তে ও ভক্তিভার হৃদয়ে কলিকাতায় ফিরিয়াছি। আবার খরমুজ ও কাশীর লেংড়ার লোভে ভক্তিগদগদাচিত্তে গ্রীষ্মের লম্বা ছুটিতে দীর্ঘ দিন বিশ্বেশ্বরের রাজধানীতে কাটাইয়াছি। শীত-গ্রীষ্ম-শরৎ বিশ্বেশ্বরের আশ্রয়ে যাপন করিয়া বিলক্ষণ বুঝিয়াছি যে, কাশীর আনন্দকানন নাম একেবারেই অতিশয়োক্তি নহে। [পাঠকবর্গের বিশ্বাস না হয়, এই পূজার বন্ধে কাশী গিয়া অধমের কথাটা পরখ করিয়া দেখিতে পারেন। ] বহু দেবতার মন্দির ও বহুতর আহাৰ্য্যের সমাবেশ দেখিয়া ইহাও বেশ বুঝিয়াছি যে, কাশী বাস্তবিকই সৰ্ব্বতীর্থময়ী। ব্ৰহ্মাণ্ডে ত্রিকোটী সাৰ্দ্ধ তীর্থ করে অবস্থিতি। 8