পাতা:পাগলা ঝোরা - ললিতকুমার শর্ম্মা.pdf/৫৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Ο Σ ধৰ্ম্মে মতি কাশীর একেবারে ঠিক উল্টা,-ইহা বড়ই আশ্চৰ্য্য। অলোকা দেবীর সঙ্গে-সঙ্গেই এখানকার খাদ্যসুখ অন্তৰ্ধান হইয়াছে, কি ত্র্যহস্পর্শের ন্যায় ত্ৰিবেণীতে বিভ্ৰাট ঘটাইয়াছে—ঠিক বুঝিতে পারিলাম না। আর এক যাত্রা বৃন্দাবনে গিয়া গোপালের মনোমোহন মূৰ্ত্তিদর্শনে ও র্তাহার ভোগ-আস্বাদনে এবং বাজারে বিক্রীত লাচ্চাদার রাবিড়ী-সেবনে হরিভক্তি সম্যক বৃদ্ধিপ্ৰাপ্ত হইয়াছিল। আহা ! সকলই প্রভুর কৃপা ! কাশীর গঙ্গার মাহাআ্যে মুগ্ধ হইয়া পরবৎসর সঙ্কল্প করিলাম, গঙ্গার অবতরণ-স্থান হরিদ্বার দর্শন করিব। তথায় ত্রিরাত্র বাস করিয়া বুঝিলাম, হরিদ্বার প্রকৃতই স্বৰ্গদ্বার। সুরধুনীর ত্ৰিধারার সলিল কি শীতল, কি সুমধুর, কি তৃপ্তিকর! নৈষধকারের ‘আপাং হি তৃপ্তায় ন বারিধারা স্বাদুঃ সুগন্ধিঃ স্বাদতে তুষারা” অন্যত্র খাটিলেও এক্ষেত্রে খাটে না ; দেখিলাম, এই সদ্যোধুত জল যতই খাই, ততই খাইতে ইচ্ছা হয় ; শুধু গলনালী কেন, হৃৎপদ্ম পৰ্য্যন্ত জুড়াইয়া যায়। বুঝিলাম, বৈশেষিক-দর্শনে যে জলের প্রাকৃতিক গুণ মাধুৰ্য্য' লিখিয়াছে, তাহা অসত্য নহে। পৃথিবীর ধূলামাটি লাগিয়াই পবিত্র গঙ্গোদকের স্বাদুতা-মধুরতা নষ্ট হইয়াছে। পরন্তু, এখানকার ঘূত ও রাবিড়ী একেবারে ভেজাল-বর্জিত। সাত্ত্বিক আহারে ধৰ্ম্মবৃদ্ধির এমন স্থান জগতে দুর্লভ। হরিদ্বার-কনখল হইতে আরও উৰ্দ্ধে গোমুখী বদরিকাশ্রম প্রভৃতি দর্শন করিবার বাঞ্ছা ছিল। কিন্তু প্ৰথম আড়া হৃষীকেশে খাদ্যদ্রব্যের দুৰ্দশা দেখিয়া তীর্থভ্ৰমণ বিষয়ে নিরুৎসাহ হইয়া প্ৰত্যাবৃত্ত হইলাম। দেবতাত্মা হিমালয়-ভ্ৰমণ করিতে আর মন সরিল না। এ সকল দুৰ্গম স্থানে কেবল ছাতু ও লঙ্কা খাইয়া পথ চলিতে হয়, শুনিয়া পা আর উঠিল না। চালচিড়া বঁধিয়া নৈমিষারণ্যের চিড় খাইতে যাইতেও আর ইচ্ছা হইল না। তখন শাস্ত্ৰ স্মরণ করিয়া জানিলাম, মহাপ্ৰাণীকে কষ্ট দিয়া