পাতা:পাগলা ঝোরা - ললিতকুমার শর্ম্মা.pdf/৬৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পাগল ঝোরা ○や2 দ্বিতীয় বাধা । আমার শিক্ষা-সমাপ্তির পর পিতৃদেব ঘটকদিগের কথায় কৰ্ণপাত করিলেন। কিন্তু তখন আবার আর এক বাধা উপস্থিত হইল। সাধে কি বলে, “শ্রেয়াংসি বহুবিস্ত্ৰানি’ ? কুলে-শীলে মিল, গণ-বর্ণে মিল, এ সব ত চাইই ; পরন্তু, উপযুক্ত পরিমাণ গণপণ,বরাভরণও মেলা চাই। আমার শিক্ষায় বরাবর যে ব্যয় পড়িয়ছে, সেই টাকাটা মূলধন ধরিয়া এত বৎসর মায় সুন্দ কত টাকা হইত, তাহার একটা মোটামুটি হিসাব খাড়া করিয়া তিনি দশ হাজার টাকা। বরপণ হাকিলেন । তিনি গণিতশাস্ত্ৰে প্ৰেমচান্দ রায়চাঁদ বৃত্তিধারী, তাহাকে হিসাবে আঁটিয়া উঠে, কাহার সাধ্য ? প্রতিবেশীরা প্ৰতিবাদ করিলে তিনি বলিতেন, “ভাই হে, হিসাবের অত মারপোচ না বুঝ, ‘পাঁচটি পাশে পাঁচটি হাজার, সোজা রূল অভ খ্ৰী (Rule of Three)” এটুকু ত বুঝ ? আর জমিদারীর বেলায় বিশগুণ পণ ধরে, আমি দ্বিগুণ পণ দশ হাজার ধরিতেছি, বেশী কি ? ছেলে কি মাটির চেয়েও সস্তা ?” তঁহার পুত্রের শিক্ষার খরচটা মায় সুন্দ কন্যাকৰ্ত্তার কাছ হইতে একতরফা ডিক্ৰী করিয়া কেন আদায় করিবেন, এ কথা লইয়া কেহ তৰ্ক করিতে আসিলে, তিনি ত্বরিত জবাব দিতেন,-“এখনকার ছেলেরা রোজগার করিয়া মা-বােপকে কিছু দেয় না, পত্নীর পাদপদ্মেই সর্বস্ব ঢালিয়া দেয় ; অতএব ভাবী বৈবাহিক মহাশয়ের কন্যাই যখন পাত্রের উচ্চশিক্ষা-কল্পতরু'র সুবর্ণফল এক-একা ভোগ করিবে, তখন শিক্ষার খরচাটা কন্যার পিতা দিবেন না ত কি পাড়ার লোকে দিবে ?” ইহার উপর আর তর্ক চলে না। পুত্রের বিবাহ সম্বন্ধে মাতাঠাকুরাণীরও অবশ্য একটা মত ছিল। আজকাল আর পিতৃদেব তাহার, ন্যায্য কথার প্রতিবাদ করিতেন না।