পাতা:পাগলা ঝোরা - ললিতকুমার শর্ম্মা.pdf/৮১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পাগলা বোরা ዓ 8 প্ৰথম পরিচ্ছেদ । ফুরাইয়াও ফুরাইল না বা শ্মশানে সন্ন্যাসী । “স্বামীর চরণমধ্যে মুখ রাখিয়া নবীন যৌবনে কুন্দনন্দিনী প্ৰাণত্যাগ করিল। অপরিস্ফুট কুন্দকুসুম শুকাইল।” এবংবিধ আকস্মিক ও শোকাবহ ঘটনায় নগেন্দ্রনাথ, সুৰ্য্যমুখী ও কমলমণি তিন জনেই শোকে মুহমান। এই বিপদে বাটীর বহুদিনের বিশ্বস্ত দেওয়ান বুক দিয়া পড়িলেন। নগেন্দ্ৰনাথের আত্মীয়স্বজনকে লইয়া দেওয়ানজী একটি মন্ত্রণা-সভা বসাইলেন। অল্পীক্ষণ গোপন-পরামর্শের পর নিকটস্থ পুলিশের থানায় একজন বিশ্বস্ত ও সুচতুর কৰ্ম্মচারী পাঠান হইল। সে লোক ফিরিয়া আসিলে সার্বভৌম ঠাকুরকে ডাকা হইল। তিনি আনুপূর্বিক ঘটনার বিবরণ শুনিয়া “আত্মনস্ত্যাগিনাং নাস্তি পতিতানাং তথা ক্রিয়া। তেষামপি তথা গঙ্গাতোয়ে সংস্থাপনং হিতম। ইতি স্মরণাৎ, তস্মাৎ অবিশেষেণ সৰ্ব্বেষাং দহনাদি-নিযেধঃ”-ইত্যাদি স্মৃতির বচন আওড়াইলেন এবং গম্ভীরভাবে ব্যবস্থা দিলেন-যেহেতু আত্মঘাতিনীর দাহ কাৰ্য্য শাস্ত্ৰে নিষিদ্ধ, অতএব মৃতদেহ যথাবিধি জলসাৎ করা হউক । [ যদিও কুন্দ মরণের সময় গান গায়িতে গায়িতে বলিয়া যায় নাই “প্রাণ যদি দেহ ছাড়ে, না দহ বহিতে মোরে,” তথাপি শাস্ত্রের বিধানে তাহাই দাড়াইল। ] দেওয়ান লোকজন ডাকাইলেন। স্বজাতীয় বাহকগণ মৃতদেহ স্কন্ধে করিয়া শ্মশানঘাটে গেল, “নগেন্দ্রনাথ ধৈৰ্য্যাবলম্বন-পূর্বক” শবের সঙ্গে সঙ্গে গেলেন। বাহকের শব্ব গঙ্গাজলে ভাসাইয়া দিয়া “স্মশান-বৈরাগ্য’ লইয়া গৃহে ফিরিল। নগেন্দ্রনাথও শূন্যমনে উদাসপ্ৰাণে তাহাদের পশ্চাৎ পশ্চাৎ আসিলেন।