পাতা:পাগলা ঝোরা - ললিতকুমার শর্ম্মা.pdf/৮৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পাগলা বোরা ዓb” স্পন্দন, তাহার পর গণ্ডদেশে ঈষৎ রক্তসঞ্চার, তাহার পর চক্ষুর পাতা অল্প অল্প কঁাপিতে লাগিল, তাহার পর হস্তপদ অল্প অল্প নড়িতে লাগিল। সন্ন্যাসী “অঙ্গুলীতে নিশ্বাসের কিছু ক্ষীণ প্রবাহ অনুভব করিলেন। ক্রমে নিশ্বাস প্রখরতার বহিতে লাগিল। নাড়ীতে হাত দিয়া দেখিলেন, নাড়ীর গতি হইয়াছে। শেষে অল্পে অল্পে পূৰ্বদিকের প্রথম প্ৰভাত রাগ-বিকাশের ন্যায়, প্ৰভাত-পদ্মের প্রথমোন্মেষের ন্যায়, প্ৰথম প্ৰেমানুভবের ন্যায়” কুন্দনন্দিনী ‘চক্ষুরুন্মীলন করিতে লাগিলেন”। কুন্দর “নিশ্বাস বহিল,” কুন্দ “বাঁচিল’। একবার কুন্দ সেই নিমীলিত নীলকমলনিভ নয়নদ্বয় খুলিল, আবার পরীক্ষণেই মুদ্রিত করিল। চক্ষুঃ মুদ্রিত করিয়াই সে জড়িতকণ্ঠে ধীরে ধীরে বলিল—স্বর বড় ক্ষীণ—তখনও বিষের ঘোর সম্পূর্ণ কাটে নাই —“নাথ, এতদিনে কি দাসীরে মনে পড়িল ?” [ নাটকাকারে পরিবর্তনের সময় নাটককার “মনে কি পড়েছে তোমার দাসী ব’লে গুণমণি, বল কি দোষে বঞ্চিত শ্ৰীপদে দুঃখিনী কুন্দনন্দিনী,” মতিরায়ের গানটির ইত্যাকার পরিবর্তন করিয়া থিয়েটারের সুর-সংযোগ করিয়া দিবেন। ] কথাগুলি বলিয়াই কুন্দ লজ্জায় মিয়মাণ হইল। সন্ন্যাসী বলিলেন, “ধীরে, সুন্দরি, ধীরে। এখনও তুমি বড় দুর্বল। বেশী কথা কহিও না। আইস, তোমাকে একটু বলকারক ঔষধ দিই।” কথা কয়টি কুন্দের কর্ণকুহরে। প্ৰবেশ করিবা-মাত্র কি যেন এক অজ্ঞাত আবেশে তাহার সর্বাঙ্গে রোমাঞ্চ হইল। [ এই রোমাঞ্চ হইতেই কি রোম্যান্সের উদ্ভব ? ] দেখিতে দেখিতে আবার কুন্দর চৈতন্যলোপ হইল। সন্ন্যাসী বুলি হইতে একটি বৃহৎ ও একটি ক্ষুদ্র কাচপাত্ৰ বাহির করিলেন এবং ক্ষুদ্র পাত্রটিতে বৃহৎ পাত্ৰ হইতে রক্তবর্ণ আরক ঢালিয়া তাহাতে কিঞ্চিৎ গঙ্গাজল মিশ্ৰিত করিলেন এবং সেই মহোপকারী তেজস্কর ঔষধ অল্প অল্প করিয়া কুন্দকে পান করাইয়া দিলেন। কুন্দ দুই একবার মুখ