পাতা:পাগলা ঝোরা - ললিতকুমার শর্ম্মা.pdf/৮৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

bን”እ» বিষবৃক্ষের উপবৃক্ষ আবার জিজ্ঞাসা করি ‘তুমি কেন মরিবে ? কি জন্য বিষ পান করিলে ?” কুন্দ চিরদিনই অল্পভাষিণী। সে সূর্যমুখী বা রোহিণী বা কল্যাণীর মত তর্কবিতর্ক না করিয়া, আস্তে আস্তে উঠিয়া বসিয়া, সন্ন্যাসীর প্রশ্নের উত্তরে, বাল্যাবধি যাহা যাহা ঘটিয়াছে, অল্প কথায় সেই কাহিনী বলিল । বসন্তারম্ভে কোকিলের কুহুরবের মত, সে মধুর কণ্ঠস্বর সন্ন্যাসীর হৃদয়ে কি যেন এক অননুভূতপূৰ্ব্ব আনন্দ আনয়ন করিল। সে কণ্ঠস্বর কি কোমল, কি মধুর—“যেন লজ্জাশীলা বালিকা স্বামীর নিকট প্রথম প্ৰেমব্যক্তি জন্য মুখ ফুটাইয়াছে।” কথা শেষ করিয়া কুন্দ গদগদ-কণ্ঠে বলিল “ “কি বুঝিবে, তুমি সন্ন্যাসী, আমার এ নীরব প্রেমের মৰ্ম্ম তুমি কি বুঝিবে ?” সন্ন্যাসী কুন্দর কুন্দসন্নিভ-দন্ত রুচিকৌমুদী দেখিতে দেখিতে, তাহার অমৃতস্রাবি-বচনবিন্যাস শুনিতে শুনিতে, তাহার পক্কবিশ্বসদৃশ অধরের স্কুরণ, হৃদয়ের স্পন্দন, গণ্ডের রক্তিমা, নয়নের নীলিমা, অঙ্গের সুষমা হেরিতে হেরিতে, কি জানি কেমন আত্মহারা হইয়া পড়িলেন। কুন্দর শেষ কথা কয়টি শুনিয়া তিনি আর স্থির থাকিতে পারিলেন না । তিনি গর্জন করিয়া উঠিলেন,-“কি বলিলে, আমি সন্ন্যাসী ? সন্ন্যাসী হইলেও আমারও রক্তমাংসের শরীর। জীবানন্দ-ভবানন্দ ভায়ারা কি সন্ন্যাসী ছিলেন না ? সকলেই কি মাধবাচাৰ্য্যের মত নিরেট পাষাণ ? তবে আমার কাহিনী শুন । শ্রান্তিবোধ করা তা আমার স্কন্ধে মাথা রাখা ।” কুন্দর কেমন সন্ন্যাসীকে দেখিয়া সঙ্কোচ বা লজ্জাবোধ হইল না । সে যন্ত্র-চালিতের ন্যায় সন্ন্যাসীর আদেশ-মত র্তাহার স্কন্ধে মস্তক রক্ষা করিয়া চক্ষুঃ মুদ্রিত করিল। এ কি সন্ন্যাসীর ‘যোগবল না Psychic Force'-না। আর কিছু ?