পাতা:পাগলা ঝোরা - ললিতকুমার শর্ম্মা.pdf/৯৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ଅରଧ বঙ্কিম-চৰ্চরী আমার রসিকতটুকু শেষ হইলে বঙ্কিমবাবু পরম গভীরভাবে, কি কি লক্ষণ দেখিয়া ভাল হুক চিনিতে ও কিনিতে হয়, এই বিষয়ে অনেকগুলি সারবান উপদেশ দিলেন। তখন ডায়েরী লেখা বা নোট রাখা অভ্যাস ছিল না, আর এ সব কথার—হুকার বাজারে মূল্য থাকিলেও— সাহিত্যের বাজারে যে মূল্য আছে, তাহা তখন জানিতাম না ; এখন দেখিতেছি, লিখিতে জানিলে এ সব কথাও সাহিত্যের বাজারে বেশ চড়া দরেই বিকায়। স্মৃতির উপর নির্ভর করিয়া এতদিন পরে এ সব কথা লেখা চলে না । বানাইয়া বলিতেও সাহস হয় না, কেন না। হুকাতত্ত্ব সম্বন্ধে আমি একেবারে আনাড়ী, কি বলিতে কি বলিব, আর শেষে ধরা পড়িব । আহা ! তখন যদি নোট রাখিতাম, তাহা হইলে সৰ্ব্বতোমুখীপ্ৰতিভাশালী বঙ্কিমচন্দ্র [ একটু ব্যাকরণ-বিভীষিকা হইয়া গেল ] হুকার কিরূপ বিশেষজ্ঞ ছিলেন, তাহ বাঙ্গালীজাতিকে শুনাইয়া তাহাদিগকেও কৃতাৰ্থ করিতাম, নিজেও কৃতাৰ্থ হইতাম । একটা কথা বলিতে ভুলিয়াছি। বঙ্কিমবাবু ফণীর নলের উল্টা দিকটা মুখে দিতেন, তাহার এই মৌলিকতার কথা বাঙ্গালী পাঠক পূর্বেই অপর একজন স্মৃতি-লেখকের মুখে জানিয়াছেন । [ যদি এ বিষয়ে কেহ আজও অজ্ঞ থাকেন, তাহা হইলে তঁহাকে খোলসা বলিব যে, তিনি প্রত্নতত্ত্ব-বারিধিতে ডুবিয়া মরুন, বঙ্কিম-প্রসঙ্গ শ্রবণ-মনন-নিদিধ্যাসন করা র্তাহার কৰ্ম্ম নহে। ] তামাকুসেবন-সম্বন্ধে তাহার আর-একটি অদ্ভুত অভ্যাস ছিল, তাহ আজও নরলোকে অপ্রচারিত আছে। তিনি ফরশীগড়গড়-হুকায় জল পুরিতেন না। জিজ্ঞাসায় জানিলাম, জলের গড়গড় শব্দে তাহার চিন্তাসূত্র ছিন্ন হয়, চিত্ত বিক্ষিপ্ত হয়, কল্পনা বাধা পায়, বুদ্ধিবৃত্তি নিস্তেজ হয়। তিনি নিঃশব্দে তামাকু টানিতে টানিতে মানসপটে র্তাহার কল্পনা লীলাময় অমর আখ্যানগুলির নক্সা আঁকিতেন। তখন