পাতা:পাঠমালা - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/১০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

জীবন চরিত

বলণ্টিন্ জামিরে ডুবাল।

 এই মহানুভাব ১৬৯৫ খৃঃ অব্দে, ফ্রান্স রাজ্যের সাম্পেন প্রদেশের অন্তর্ব্বর্ত্তী আর্টনি গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন। তাঁহার পিতা অত্যন্ত দরিদ্র ছিলেন,সামান্যরূপ কৃষি কর্ম্ম মাত্র অবলম্বন করিয়া যথা কথঞ্চিৎ পরিবারের ভরণপোষণ নির্ব্বহ করিতেন। ডুবাল যখন দশমবর্ষীয়, তখন তাঁহার পিতা মাতা, আর কতকগুলি পুত্র ও কন্যা রাখিয়া পরলোক যাত্রা করেন। তাঁহাদের প্রতিপালনের কোন উপায় ছিল না; সুতরাং ডুবাল অত্যন্ত দুরবস্থায় পড়িলেন; কিন্তু এইরূপ দুরবস্থায় পড়িয়াও মহীয়সী উৎসাহশীলতা ও অবিচলিত অধ্যবসায়প্রভাবে সমস্ত প্রতিবন্ধক অতিক্রম করিয়া অসাধারণ বিদ্যোপার্জ্জনাদি দ্বারা পরিশেষে মনুষ্যমগুলীতে অগ্রগণ্য হইয়াছিলেন তিনি দুই বৎসর পরে এক কৃষকের আগয়ে পেরুশাবক সকলের রক্ষণাবেক্ষণার্থে নিযুক্ত হইলেন। কিন্তু বালস্বভাবসুলভ কতিপয় গর্হিতাচার দোষে দুষিত হওয়াতে অল্প দিনের মধ্যেই তথা হইতে দূরীকৃত হইলেন। পরিশেষে ঐ কারণেই জন্মভুমিও পরিত্যাগ করিতে হইল।

 অনন্তর ডুবাল ১৭৮৯ খৃঃ অব্দের দুঃসহ হেমন্তের উপক্রমে লোৱেন প্রস্থান করিলেন। পথিমধ্যে বিষম বসন্ত রোগে আক্রান্ত হইলেন। ঐ সময়ে যদি এক কৃষকের আশ্রয় না পাইতেন তাহা হইলে তাঁহার অকালে কালগ্রাসে পতিত হইবাযর কোন অসম্ভাবনা ছিল না। কিন্তু ভাগ্যক্রমে ঐ ব্যক্তি তাঁহার তাদৃশ দশা দর্শনে দয়ার্দ্রচিত্ত হইয়া তাঁহাকে আপন মেষশালায় লইয়া গেলেন তথায় মেষপুরীষরাশি ব্যাতিরিক্ত অন্যবিধ শয্যার সঙ্গতি ছিল না।