পাতা:পাঠমালা - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/২৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
গ্রোশ্যস।
১৯

তিনি কহিলেন ইহার মধ্যে অধিক পুস্তক আছে তাহাতেই এত ভারী হইয়াছে; গ্রোশ্যসের শারীরিক স্বাস্থ্য রক্ষার্থে তাঁহার পত্নী ঐ সমুদায় পুস্তক এক কালে ফিরিয়া দিবার নিমিত্ত অনুমতি লইয়াছেন।

 এক দাসী এই গোপনীয় পরামর্শের মধ্যে ছিল সে ঐ করণ্ডকের সঙ্গে সঙ্গে গমন করে। করণ্ডক এক বন্ধুর আলয়ে নীত হইলে গ্রোশ্যস অব্যাহত শরীরে তন্মধ্য হইতে নির্গত হইলেন এবং রাজমিস্ত্রির বেশপরিগ্রহও করে কর্ণিক ধারণ পূর্ব্বক আপণের মধ্য দিয়া গমন করিয়া নৌকাৱোহণ করিলেন এবং তদ্দ্বারা ব্রাবণ্টে উপস্থিত হইয়া তথা হইতে শকট যানে এণ্টওয়ের্প প্রস্থান করলেন। ১৬২১ খৃঃ অব্দের মার্চ্চ মাসে এই শুভ ব্যাপার নির্ব্বাহ হয়। গ্রোশ্যসের সহধর্ম্মিণীর যত দিন এরূপ দৃঢ় প্রত্যয় না জন্মিল, গ্রোশ্যস সম্পূর্ণরূপে বিপক্ষবর্গের ক্ষমতার বহির্ভুত হইয়াছেন, তাবৎ তিমি সকলের এই বিশ্বাস জন্মাইয়া রাখিয়াছিলেন যে তাঁহার স্বামী অত্যন্ত রোগাভিভূত হইযা শয্যাগত আছেন।

 কিয়ৎ দিন পরে এই বিষয় প্রকাশ হইলে তিনি পূর্ব্বাপর সমুদায় স্বীকার করিলেন। তখন দুর্গাধ্যক্ষ ক্রোধে অন্ধ হইলেন এবং তাঁহাকে দৃঢ়রূপে রুদ্ধ করিয়া যৎপরোনাস্তি ক্লেশ দিতে লাগিলেন। পরিশেষে, তিনি রাজপুরুষদিগের নিকট আবেদন করিয়া মুক্তি প্রাপ্ত হইলেন। কতকগুলা পামর প্রস্তাব করিয়াছিল তাঁহাকে যাবজ্জীবন কারারুদ্ধ করা কর্তব্য। কিন্তু অনেকেরই অন্তঃকরণে করুণাসঞ্চার হওয়াতে তাহা ত্যগ্রাহ্য হইল। ফলতঃ সকলেই তাহার বুদ্ধিকৌশল, সহিষ্ণুতা ও পতিপরায়ণতা দর্শনে ভূয়সী প্রশংসা করিয়াছিলেন।

 গ্রোশ্যস ফ্রান্সে গিয়া নির্ভয় ও নিশ্চিন্ত হইয়া বাস করিতে