পাতা:পাঠমালা - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/৫৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
শকুন্তলা
৪৫

হইলে, শার্ঙ্গরব কহিলেন আমাদিগের গুরুদেবের যে সন্দেশ লইয়া আসিয়াছি নিবেদন করি, শ্রবণ করুন। মহর্ষি কহিয়াছেন “আপনি আমার অজ্ঞাতসারে আমার কন্যার পাণিগ্রহণ করিয়াছেন; আমি সবিশেষ সমস্ত অবগত হইয়া তদ্বিষয়ে সম্পূর্ণ সম্মতি প্রদান করিছি। আপনি সর্ব্বাংশে আমার শকুন্তলার যোগ্য পাত্র। এক্ষণে আপনকার হরণী অন্তঃসত্ত্বা হইয়াছেন, গ্রহণ করুন”। গোতমীও কহিলেন আর্য্য! আমি কিছু বলতে চাই, কিন্তু বলিবার পপ নাই। শকুন্তলা আপন গুরুজনের অনুমতির অপেক্ষা রাখে নাই; তুমিও তাঁহা দিগকে জিজ্ঞাসা কর নাই। অতএব, দ্যোলয়। প; পরে সন্মতিতে যাহা করিয়া তাহাতে অন্যের কথা কহিবার কি আছে।

 শকুন্তলা শুনিয়া মনে মনে শঙ্কিতা ও কম্পিত হইয়া এই ভাবিতে লাগিলেন, না জানি আপুত্র কি বলেন। রাজা দুর্ব্বসার শীপপ্রভাবে শকুন্তলার পরিণয়ন্তা আদ্যোপান্ত বিস্মত হইয়াছিলেন, সুতরাং শুনিয়া বিস্ময়াপন্ন হইয়া কহিলেন এ আবার কি উপস্থিত! শকুন্তলা শুনিয়া একবারে ম্রিয়মাণ। হইলেন। শারদ কহিলেন মহারাজ! আপনি লেকিক ব্যবহার বিলক্ষণ অবগত হইয়াও এরূপ কহিছেন কেন? আপনি কি জানেন না যে পরিণীত নারী যদিও অত্যন্ত সাধুশীলা হয়, তাথাপি সে নিয়ত পিতৃকুলবাসিনী হইলে লোকে নানা কথা কহিয়া খাকে? এই নিমিত্ত, মে পতির অপ্রিয় হইলেও, তাহার পিতৃপক্ষ তাহাকে পতিকুলবাসিনী করিতে চাহে।

 রাজা কহিলেন কই আমি ত ইঁহার পাণিগ্রহণ করি নাই। শকুন্তলা শুনিয়া বিষদসমুদ্রে মগ্ন হইয়া মনে মনে কহিতে লাগিলেন হৃদয়! যে আশঙ্কা করিতেছিলে তাহাই ঘটিয়াছে। শার্গরব রাজার অস্বীকার শ্রবণে, তদায় ধূর্ততা আশঙ্কা করিয়া যৎ-