পাতা:পাঠমালা - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/৫৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৪৬
শকুন্তলা
৪৬

পরোনাকি কুপিত হইয়া কহিলেন মহারাজ! জগদীশ্বর আপনাকে ধর্ম্ম সংস্থাপন কার্য্যে নিযোজিত করিয়াছেন। অনন্য অন্যায় করলে আপনাকে দণ্ড বিধান করিতে হয়। এক্ষণে আপনাকে জিজ্ঞাসা করি রাজা হইয়া অনুষ্ঠিত কার্যের অপলাপে প্রস্তু হইলে ধর্ম্মবিদ্রোহী হইতে হয় কি না? রাজা কহিলেন আপনি আমাকে এত অভদ্রস্থির করিতেছেন কেন? শার্ঙ্গরব কহিলেন মহারাজ! আপনকার অপরাধ নাই; যাহারা দেয় তাহাদের এইরূপই স্বভাব ও এইরূপই আচরণ হইয়া কে? রাজা কহিলেন আপনি অন্যায়: ভৎসনার করিতেছেন; আমি কেন মেই এরূপ ভৎসনার যোগ্য নহি।

 এইরূপে রাজাকে অস্বীকার পরায়ণ ও শকুন্তলাকে লজ্জায় অবনমুখী দেখিয়া, গোতমী শকুস্থলাকে সম্বোধন করিয়া কহিলেন বসে! লজ্জিত হইও না; আমি তোমার মুখের ঘোমটা থুলিয়া দিতেছি, তাহা হইলেই মহারাজ তোমাকে চিনিতে পারিবেন। এই বলিয়া মুখের অবগুণ্ঠন খুলিয়া দিলেন। রাজা তথাপি চিনিতে পারিলেন না বরং পূর্ব্বাপেক্ষায় সমধিক সংশয়ারূঢ় হইয়া মোনাবলম্বন করিয়া রহিলেন। তখন শার কহিলেন মহারাজ! এরূপ মৌনভাবে রহিলেন কেন? রাজা কহিলেন মহাশয়! কি করি বলন; অনেক ভাবিয়া দেখিলাম, কিন্তু ইহার পাণিগ্রহণ করিয়াছি বলিয়া কোন ক্রমেই স্মরণ হইতেছে না। সুতরাং কি প্রকারে ইহাকে ভার্য বলিয়া পরিগ্রহ করি। বিশেষতঃ ইনি এক্ষণে অন্তসত্ত্বা হইয়াছেন।

 রাজার এই বচনবিন্যাস শ্রবণ করিয়া শকুন্তলা মনে মনে কহিতে লাগিলেন হায় কি সর্ব্বনাশ! একবারে পাণিগ্রহণেই সন্দেহ! রাজহিষ হইয়া অশেষ মুখ সম্ভোগে কাল হরণ করিব,