পাতা:পাঠমালা - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/৭৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
শকুন্তলা
৬৭

করিতেছ। তখন তাপমী কহিলেন মহাশয়! আপনি জানেন না, এ ঋষিকুমার নয়। রাজা কহিলেন বালকের আকার প্রকার দেখিয়াই বোধ হইতেছে ঋষিকুমার নয়। কিন্তু এ স্থানে ঋষিকুমার ব্যতীত অন্যবিধ বালকের সমাগম সম্ভাবনা নাই, এই জন্য আমি এরূপ বোধ করিয়াছিলাম।

 এই বলিয়া রাজা সেই বালকের হস্তগ্রহ হইতে সিংহ শুকে মুক্ত করিয়া দিলেন এবং স্পর্শমুখ অনুভব করিয়া মনে মনে কহিতে লাগিলেন পরের পুত্রের গাত্রস্পৰ্শ করিয়া আমার এরূপ সুখানুভব হইতেছে; যাহার পুত্র, সে ব্যক্তি ইহার গাত্রস্পর্শ করিয়া কি অনুপম সুখ অনুভব করে তাহা বলা যায় না। | বালক অত্যন্ত দুরন্থ হইয়াও রাজার নিকট অত্য2 শাহুস্বভাব হইল ইহা দেখিয়া এবং উভয়ের আকারগত সৌসাদৃশ্য দর্শন করিয়া, তাপ বিস্ময়াপন্ন হইলেন। রাজা, সেই বালককে ক্ষত্রিয়সন্তান নিশ্চয় করিয়া, জিজ্ঞাসিলেন এই বালক যদি ঋষিকুমার না হয়, কোন্ ক্ষত্রিয় বংশে জন্মিয়াছে, জানতে ইচ্ছা করি। তাপসী কহিলেন মহাশয়! এ পুরুবংশীয়। রাজা শুনিয়া মনে মনে কহিতে লাগিলেন আমি যে বংশে জন্মিয়াছি ইহারও সৈই বংশে জন্ম। পুরুবংশীয়দিগের এই রীতি বটে; তাঁহারা, প্রথমতঃ অশেষ সাংসারিক সুখভোগে কাল যাপন করিয়া, পরিশেষে সস্ত্রীক হইয়া 'অরণ্যবাস আশ্রয় করেন।

 অনন্তর তাপসীকে জিজ্ঞাসিলেম এ দেবভূমি; মানুষের অবস্থিতির স্থান নহে। অতএব এ বালক কি সংযোগে এখানে আসিল? তাপমী কহিলেন ইহার জননী, অল্পসম্বন্ধে এখ:নে আসিয়া এই সন্তান প্রসব করিয়াছেন। রাজা শুনিয়া মনে মনে কহিতে লাগিলেন পুরুবংশ ও অল্পসম্বন্ধু এই দুই কথা খুনিয়া, আমার হৃদয়ে পুনর্ব্বার আশার সঞ্চার হইতেছে। যাহা