পাতা:পাঠমালা - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/৮০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
শকুন্তলা
৭১

আসিয়া প্রফুল বদলে কহিলেন মহারাজ! এত দিনের পর আপনি যে ধর্মপত্নী সহিত সমাগত হইলেন, ইহাতে আমরা কি পর্যন্ত আঙ্কাদিত হইয়াই বলিতে পারি না। ভগবান্ কশ্যপও শুনিয়া অতিশয় প্রীত হইয়াছেন। এক্ষণে গিয়া ভগবানের সহিত সাক্ষাৎ করুন। তিনি আপনার প্রতীক্ষা করিতেছেন। তখন রাঙ্গা শকুন্তলাকে কহিলেন প্রিয়ে! চল, আজি উভয়ে এক সমভিব্যাহারে ভগবানের চরণ দর্শন করিব। শকুন্তলা কহিলেন আপু! ক্ষমা কর, আমি তোমার সঙ্গে গুরুজনের নিকট যাইতে পারি না। তখন রাজা কহিলেন প্রিয়ে! শুভ সময়ে এক সমভিব্যাহায়ে গুরুজনের নিকটে যাওয়া দুষ্য নহে। চল, বিলম্ব করিয়া কাজ নাই।

 এই বলিয়া রাজা, শকুন্তলাকে সঙ্গে লইয়া, মাতলি সমভিবাহারে কশ্যপের নিকট উপস্থিত হইলেন; দেখিলেন ভগবান অদিতির সহিত একাসনে বসিয়া আছেন। তখন সস্ত্রীক সাষ্টাঙ্গ প্রণিপাত করিয়া কৃতাঞ্জলিপুটে ‘সম্মুখে দণ্ডায়মান রহিলেন। কশ্যপ * বৎস! চিরজীবী হইয়া অপ্রতিহতভাবে অখণ্ড ভূমণ্ডলে একাধিপত্য কর” এই বলিয়া আশীর্ব্বাদ করিলেন। অনন্তর শকুন্তলাকে কহিলেন বৎসে! তোমার স্বার্মা ইন্দ্রসদৃশ, পুত্র জয়ন্তসদৃশ; তোমাকে অন্য আর কি আশীৰ্বাদ করিব। তুমি শচীসদৃশী হও। উভয়কে এই আশীর্ব্বাদ করিয়া উপবেশন করিতে কহিলেন।

 সকলে উপবিষ্ট হইলে, রাজা কৃতাঞ্জলি হইয়া বিনয়বচনে নিবেদন করিলেন ভগব। শকুন্তলা আপনকার সগোত্র মহর্ষি কণের পালিততনয়া। আমি মৃগয়া প্রসঙ্গে মহর্ষির তপোবনে উপস্থিত হইয়া, গান্ধর্ব্ব বিধানে ইহার পাণিগ্রহণ করিয়াছিলাম। পরে ইনি যংকালে রাজধানীতে উপস্থিত হন, তখন আমার