পাতা:পাতঞ্জল দর্শন.djvu/১৮২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

[পা ২। সূ ৩০ । ] সাধন পাদ | ১৬৫ হইয়াছে অর্থাৎ অহিংসা বৃত্তি কতদূর স্থির হইতেছে তাহার প্রতিলক্ষ্য রাখিয়া সত্যাদির অনুষ্ঠান করা কৰ্ত্তব্য। এই অহিংসা বৃত্তির স্বচ্ছতার নিমিত্ত সত্যাদির অনুষ্ঠান করিতে হয় ( তাহ না হইলে অসত্য প্রভৃতি দোষে অহিংসা মলিন হইয়া যায় ) এইরূপেই শাস্ত্রে উক্ত আছে "মুমুক্ষু ব্রাহ্মণ যেমন যেমন সত্যাদি বহুবিধ ব্রতের অনুষ্ঠান করিতে থাকেন অমনি প্রমাদ (অনবধান ) বশতঃ অনুষ্ঠিত হিংসার কারণ হইতে প্রতিনিবৃত্ত হইয়া ঐ অহিংসাকেই অবদাতরূপ অর্থাৎ নিৰ্ম্মল করিয়া থাকেন। যথার্থ ব্লাক ও মনকে সত্য বলে, অর্থাৎ যেরূপ প্রত্যক্ষ, অনুমিতি বা শব্দজন্য জ্ঞান হইয়াছে বলিবার ইচ্ছা হইলে তদ্রপেই বাক্যের ও মনের ব্যাপার করিবে, প্রত্যক্ষাদি দ্বারা নিজের যেরূপ জ্ঞান হইয়াছে, তদ্রুপেই শ্রোতার যাহাতে জ্ঞান জন্মে এ প্রকারে কথা বলিলে সত্য বলা হয়, এতাদৃশ বাক্য যদি বঞ্চনার (প্রতারণার ) কারণ বা ভ্রমজন্য হয় তবে সত্য রক্ষা হয় না, শ্রোতা বুঝিতে না পারে এরূপে বাক্য প্রয়োগ করিলেও সত্য হয় না। উক্ত প্রকারে বাক্যের প্রয়োগ এভাবে করিবে যাহাতে সমস্ত জীবের উপকার হয়, অনিষ্টের কারণ না হয়। পূৰ্ব্বোক্তরূপে বাক্য প্রয়োগ করিলেও যদি পরের অনিষ্ট হয় তাহাতে সত্য রক্ষা হয় না, উহাতে বরং পাপ হয়, পরের অনিষ্টকারক সত্য বাক্য গ্রয়োগ করা পুণ্য নহে, আপততঃ পুণ্য বলিয়া প্রতীয়মান হয় বটে, কিন্তু উহা হইতে কষ্টতম নরকছুঃখ হইয়া থাকে, অতএব বিবেচনা করিয়া বাক্য প্রয়োগ করিবে যাহাতে জীব সকলের হিত ভিন্ন অহিত না হয়। অশাস্ত্রপূৰ্ব্বক অথাৎ প্রতিগ্রহ ব্যতিরেকে পরের দ্রব্য গ্রহণ করাকে স্তেয় (চৌর্য্য ) বলে, উহার অভাবের নাম অস্তেয়, কেবল চুরি না করা নহে, মন হইতে পরের দ্রব্যে স্পৃহা পরিত্যাগ করিবে। * গুপ্তেন্দ্রিয় উপস্থের (স্ত্রীপুং চিহ্নের) সংযম অর্থাৎ মৈথুন ও তদ্বিষয়ে শ্রবণাদির ব্যাপার রহিত করাকে ব্রহ্মচৰ্য্য বলে। বিষয়ের অর্থাং উপভোগ্য বস্তুর উপার্জন, রক্ষা, ক্ষয়, সঙ্গ ও হিংসাদোষ অনুভব করিয়া তাহা হইতে বিরত থাকার নাম অপরিগ্রহ। এই পাচটকে যম বলে ॥ ৩০ ॥ মন্তব্য। আধ্যাত্মিক উন্নতির অভিলাষ থাকিলে প্রথমতঃ যম নিয়ম হইতেই স্বত্রপাত করিতে হয়, কেবল বাহিরে প্রদর্শন করিলে কোনও ফল হয় না, চিত্তের মলিনতা বিদূরিত হইতেছে কি না তাহার প্রতি দৃষ্টি রাখা কৰ্ত্তব্য।