পাতা:পাতঞ্জল দর্শন.djvu/২০৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

প। ২। সূ৪৯ । ) সাধন পাদ । styసి অনুবাদ । বহিঃস্থিত বায়ুকে অন্তঃপ্রবেশ করানকে শ্বাস ও অন্তরের বায়ুকে বহির্নিসারণকে প্রশ্বাস বলে এই উভয়বিধ ক্রিয়ার নিরোধক্কপ প্রাণায়াম আসন জয় হইলে সম্পন্ন হয় ॥ ৪৯ ॥ মন্তব্য । শ্বাস প্রশ্বাস স্বয়ংই ক্রিয়ারূপ, তাহাতে আর গতির সম্ভব নাই, সুতরাং শ্বাসপ্রশ্বাসের গতিবিচ্ছেদ হওয়া অসম্ভব, তাই স্বত্রস্থ গতিপদের বিবক্ষ না করিয়া ভাষ্যকার শ্বাসপ্রশ্বাস, এই উভয়ের অভাবকেই প্রাণায়াম বলিয়াছেন । ভিতরের বায়ুকে বাহির করাকেই রেচক বলে না, প্রাণবায়ুকে বাহির করিয়া সেখানেই স্থির রাখাকে রেচক বলে, সদাগতি বায়ুকে স্থির করিয়া রাখিলেই আয়াম হয় অর্থাৎ রুদ্ধ করা হয়। এইরূপ বাহিরের বায়ুকে ভিতরে প্রবেশ করানকেই পূরক বলে না কিন্তু ভিতরে প্রবেশ করাইয়া স্থির রাখাকে পূরক বলে। বায়ুকে স্থির রাখিলেই প্রাণায়াম সিদ্ধি হয়। জোয়ার ভাটায় জলপ্রবাহের দ্যায় শ্বাসপ্রশ্বাস ক্রিয়াতে প্রাণবায়ুর গতায়াতরূপে একটা প্রবাহ আছে, সচরাচর স্বস্থ শরীরে স্বভাবতঃ বহিঃপ্রদেশে বিতস্তি (১২ অঙ্গুলি) পরিমাণ প্রাণবায়ুর সঞ্চলন হয়, ঐ পর্য্যন্ত গমন করিয়া প্রত্যাবৃত্ত হইয়া শরীরাভ্যন্তর কোষ্ঠ প্রভৃতি স্থানে গমন করে তথা হইতে পুনৰ্ব্বার বাহিরে আসে এই ভাবে সৰ্ব্বদা একটা বায়ুর প্রবাহ চলে, ইহাতে শরীরস্থ দূষিত ভাগ পরিত্যাগ করিয়া পরিশুদ্ধ বায়ু অন্তরে প্রবিষ্ট হয়। আধ্যাত্মিক বায়ুর দূষিত ভাগ বিগম ও পরিশুদ্ধ ভাগের আগম ভিন্ন এই প্রাণবায়ুর বিনাশ হয় না, এই প্রাণবায়ু লিঙ্গ শরীরের ঘটক, যত দিন স্থল শরীরে প্রাণবায়ুর ক্রিয়া থাকে তত দিন জীবিত বলিয়া ব্যবহার হয়। মনঃ ইচ্ছাশক্তিবিশিষ্ট, প্রাণাদি বায়ু ক্রিয়াশক্তিবিশিষ্ট, এই উভয়ের এমনই সম্বন্ধ যে একটার নিরোধ হইলে অপরটার নিরোধ সহজেই হইতে পারে। এই নিমিত্তই প্রাণায়ামকে যোগের প্রধান অঙ্গ বলিয়া নির্দেশ হইয়াছে। প্রাণায়াম শিক্ষা করা বড়ই কঠিন ব্যাপার, গুরুর উপদেশ ব্যতিরেকে আপনা হইতে ঐ কাৰ্য্য করিলে কুষ্ঠ প্রভৃতি নানাবিধ রোগ জন্মিতে পারে। সচরাচর সন্ধ্যাবন্দনাদিতে যে প্রাণায়ামের নির্দেশ আছে উহ। একটা অনুপাত মাত্র যেমন ৪ বার মন্ত্রজপে পূরক, ১৬ বারে কুম্ভক ও ৮ বারে - রেচক ; ১৬ বারে পূরক, ৬৪ বারে কুম্ভক ও ৩২ বারে রেচক ইত্যাদি, অর্থাৎ পুরকের চতুগুণ কুম্ভক, কুস্তকের অৰ্দ্ধ রেচক এইরূপে অনুপাত বুঝিতে হইৰে ।