পাতা:পাতঞ্জল দর্শন.djvu/২৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

[ পা ১। সূ২ । ] সমাধি পাদ । . . » X আবর্তক। নতুবা কেবল ইহা হইতে উহা ভিন্ন এইরূপ সহস্রবার চীৎকার করিলেও শ্রোতার হৃদয়ঙ্গম হয় না, তাই প্রথমতঃ পুরুষ ও বুদ্ধির স্বরূপ ও সাধুতা অসাধুতা প্রভৃতি বিশেষ করিয়া দেখান হইয়াছে। প্রথম স্বত্রভাষে যে ক্ষিপ্ত মূঢ় প্রভৃতি পঞ্চবিধ চিত্তভূমির উল্লেখ আছে। দ্বিতীয় স্বত্রভান্যে তাহাই রিশদরূপে বর্ণিত আছে। রজোগুণের সম্পূর্ণ আবির্ভাবের নাম ক্ষিপ্ত অবস্থা, ইহাতে" উন্মত্তের দ্যায় চিত্ত জাগতিক বিষয় ব্যাপারে সর্বদা ব্যাপৃত থাকে, ক্ষণকালও পরমার্থ পথে স্থিররূপে অবস্থান করে না । মূঢ় অবস্থা ইহা অপেক্ষাও নিকৃষ্ট, তখন তমোগুণের সম্পূর্ণ মাবির্ভাব হওয়ায় চিত্ত মোহজালে সম্পূর্ণ আচ্ছন্ন হইয়া ভাল মন্দ বিচারে সৰ্ব্বথা অসমর্থ হয়। তখন মনুষ্যে ও পশু প্রভৃতিতে ভেদ থাকে না বলিলেও চলে। বিক্ষিপ্ত অবস্থা পূৰ্ব্বোক্ত ক্ষিপ্ত অবস্থা হইতে কিঞ্চিৎ উৎকৃষ্ট ; এই অবস্থায় ভবসমুদ্রসঞ্চারি মনোরূপ মৎস্ত ক্ষণকালের নিমিত্ত সমাধিজলে আবদ্ধ হয় কিন্তু পরক্ষণেই লম্ফপ্রদানে নিজবিহারদেশ বিষয়জলাশয়ে প্রবেশ করিয়া স্বচ্ছন্দ-বিহার করিতে থাকে। যেমন বৃহৎ জলাশয়ে মৎস্ত স্বীকার করিতে হইলে জালের আয়তন অধিক হইলেই সুবিধা হয়, আয়তজালে একবার মৎস্ত বদ্ধ করিতে পারিলে ক্রমশঃ জাল গুটাইয়া মৎস্তের সঞ্চার স্থান কমাইয়া পরিশেষে হাত দিয়াও ধরিতে পারা যায় ; তদ্রুপ চিত্তকে জয় করিতে হইলে অগ্ৰে তাহার বিষয় অর্থাৎ সমাধির আলম্বন স্থল পদার্থকেই করা কর্তব্য, পরে যত সঙ্কোচ করিতে শক্তি জন্মে ততই সূক্ষ্ম সূক্ষ্মতর সূক্ষ্মতম বিষয়ে অবগাহন করিয়া পরিশেষে এমন কি বিষয় পরিত্যাগ করিয়াও চিত্ত স্থির থাকিতে পারে। মৎস্তকে একবার ধরিতে পারিলে যেমন শেষে আর জালের আবশুক থাকে না, তদ্রুপ চিত্তকেও জয় করিতে পারিলে আর ধারণার (সমাধির ) বিষয়ের আবশুক থাকে না । মনোমীনকে তখন বিষয়জলাশয় হইতে সম্পূর্ণভাবে উপরে স্থাপন করা হইয়াছে, ছাড়িয়া দিলেও আর যাইতে পরিবে না। একাগ্র অবস্থায় সাত্বিকবৃত্তির উদয় (চিত্তও পুরুষের ভেদক্ষুদ্রণ) হয়, তখনও রজোগুণের অংশ অল্পমাত্রায় সত্বের সাহায্য করে, গুণত্রয় পুরস্পর সম্বদ্ধ। একাগ্র অবস্থা ও নিরুদ্ধ অবস্থাই যোগভূমি, একাগ্র অবস্থায় সম্প্রজ্ঞাত ও নিরুদ্ধ অৰস্থায় অসম্প্রজ্ঞাত সমাধি হয় ॥ ২ ॥