পাতা:পাতঞ্জল দর্শন.djvu/৩২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

[ পা ১। সূ ৪ । ] সমাধি পাদ । • •Ꮌ © মতিরাপনীয়া” অর্থাৎ কেবল তর্ক দ্বারায় আত্মজ্ঞান লাভ হয় না। নিষ্কামভাবে, সমস্ত কৰ্ম্মের অনুষ্ঠান দ্বারা চিত্তশুদ্ধি হইলে শ্রবণ, ( অধ্যাত্মশাস্ত্রের মৰ্ম্মবোধ ) মনন (যুক্তি দ্বারা শাস্ত্র বিষয় স্থির করা) ও নিদিধ্যাসন (ধারণা, ধ্যান, সমাধি ) সহকারে এই দুজ্ঞেয়-তত্ব-জ্ঞান জন্মিতে পারে। প্রথমতঃ এরূপ আশঙ্কা হইতে পারে ; আমি মুখী, আমি দুঃখী, দেখিতেছি, শুনিতেছি, আমার ক্ষুধ, আমার পিপাস, আমার স্মরণ ইত্যাদি রূপে প্রতিক্ষণই সুখ-দুঃখাদি ধৰ্ম্মরিশিষ্ট বলিয়া আত্মার প্রত্যক্ষ হইতেছে, তবে আত্মার কোনও ধৰ্ম্ম নাই ইহা কিরূপে সঙ্গত হইতে পারে ? যদিচ শাস্ত্র, অনুমান প্রভৃতি পরোক্ষ প্রমাণ দ্বারা “আত্মার কোনও ধৰ্ম্ম নাই” ইহা প্রতিপন্ন করা যায়, কিন্তু ইহা উক্ত প্রত্যক্ষপ্রমাণের সম্পূর্ণ বিরুদ্ধ বলিয়া উহাকে প্রমাণ বলিয়া স্বীকার করা যায় না, অপর সকল প্রমাণই প্রত্যক্ষ প্রমাণের আশ্রয়ে উৎপন্ন হয় সুতরাং প্রত্যক্ষের বিরোধ হইলে পরোক্ষ প্রমাণ অনুমান আগম প্রভৃতিকে স্বীকার করা যায় না। o একটু চিন্তা করিলে উক্ত বিষয়ের মীমাংসা হইতে পারে, সকল প্রমাণ অপেক্ষা প্রত্যক্ষ প্রমাণ বলবৎ তাহার সন্দেহ নাই, কিন্তু দেখিতে হইবে ঐ প্রত্যক্ষট প্রমাণ ( প্রমার অর্থাৎ যথার্থ জ্ঞানের জনক ) কি না ? প্রত্যক্ষটা প্রমাণ না হইলে উহা পরোক্ষপ্রমাণ দ্বারা অবশ্যই বাধিত হইবে। দিক্‌ বিভ্রমস্থলে অনেকেই পূৰ্ব্বকে উত্তর বলিয়া জানে, উহা প্রত্যক্ষজ্ঞানও বটে, কিন্তু উহা “এটা উত্তর নহে, পূৰ্ব্ব” এইরূপ পরোক্ষ প্রমাণ (শব্দ) দ্বারা বাধিত হইয়া থাকে। এইরূপ আত্মবিষয়ে সাধারণ ভ্রান্তগণের আমি সুখী ইত্যাদি রূপে প্রত্যক্ষ হয় উহা প্রমাণ নহে, ভ্রম ; সুতরাং শাস্ত্র প্রভৃতি পরোক্ষ প্রমাণ দ্বারা অবশুই বাধিত হইবে। অধ্যাত্মবিষয়ে আর একটা উদাহরণ দেখাইলে উক্ত বিষয় সহজেই প্রতিপন্ন হইবে। হস্তপদাদি অঙ্গবিশিষ্ট এই স্থলদেহ আত্মা নহে এ বিষয় নাস্তিক ভিন্ন আস্তিক (যাহারা পরলোক স্বীকার করেন ) গণ সকলেই স্বীকার করেন, অথচ আমি স্থল, কৃশ, সুন্দর ইত্যাদি রূপে স্থলদেহকেই আত্মা বলিয়া সাধারণের প্রতীতি হইতেছে ; স্থলদেহের ধৰ্ম্ম স্থূলতা প্রভৃতি —যেমন আত্মার না হইয়াও তাহার বলিয়া বোধ হয় তদ্রুপ স্বদেহেরধৰ্ম্ম