পাতা:পাতঞ্জল দর্শন.djvu/৮৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পা ১ । সূ৩২। ] সমাধি পাদ। *>. বিক্ষেপের সম্ভাবনাই নাই, স্থির থাকিয়া এক বিষয় হইতে অন্য বিষয়ে গমন করাকেই বিক্ষেপ বলে, ক্ষণস্থায়ী চিত্তে বিক্ষেপই বা কি আর সমাধিই বা কি ? এই ক্ষণিক চিত্তকেই তাহারা আত্মা বলে অর্থাৎ বুদ্ধিকে আত্মা বলায় বৌদ্ধ যুজ্ঞা হইয়াছে। যে ব্যক্তির অনুভব জন্মে, সংস্কার জন্মিয় উদ্বোধক সহকারে তাহারই স্মরণ হইয়া থাকে, এবং যে ব্যক্তি ধৰ্ম্মাধৰ্ম্ম উপার্জন করে তাহারই মুখদুঃখ ভোগ হয় ইহাই সৰ্ব্বসম্মত, ক্ষণুিক চিত্ত স্বীকার করিলে উক্ত উভয়ই সম্ভব হয় না, যে ক্ষণিক চিত্তরূপ আত্মা বিষয় অনুভব করিয়াছে পরক্ষণেই সে ব্যক্তি নাই কালান্তরে কিরূপে স্মরণ হইবে ? যে ব্যক্তি কৰ্ম্ম দ্বারা ধৰ্ম্ম ও অধৰ্ম্ম উপদুজন করিয়াছে, কালান্তরে সে নাই, সুখদুঃখ ভোগ কে করিবে ? বেীদ্ধের এ বিষয়ে বলিয়া থাকেন, উক্ত দোষ হইবে না, কারণ প্রবাহের অন্তর্গত পূৰ্ব্ব পূৰ্ব্ব ক্ষণিক চিত্ত হইতে উত্তরোত্তর ক্ষণিক চিত্ত উৎপন্ন হয়, পূৰ্ব্ব চিত্তে যাহা অনুভূত বা কৃত হইয়াছে উত্তর চিত্তে তাহার ফল জন্মিতে পারে, এরূপ স্থলে একের ফল অপরে হইবার সম্ভাবনা নাই, ফল কথা স্থিরচিত্তস্থলে একটা ক্ষণিক প্রত্যয় ধারা স্বীকার করা হইতেছে। পুত্রে শ্রাদ্ধ করিলে পিতার ফলভোগ হয়, আম্র বৃক্ষের মূলদেশে মধুর রস সেক করিলে পরম্পরায় ফলেও মধুর রস জন্মে, তদ্রুপ পূৰ্ব্ব চিত্তের সংক্রম পরচিত্তে হইবে। ঐরূপ সিদ্ধান্তে ভাষ্যকার বলিতেছেন উহা গোময় পায়সীর দ্যায় অপেক্ষাও জঘন্য। দ্যায়ের তাৎপৰ্য্য এইরূপ “গোময়ং পায়সং গব্যত্বাৎ সম্মত-পায়সবৎ’ অর্থাৎ গোময়কে .পায়স বলা যাইতে পারে, কারণ উহ, গব্য, যে গব্য হয় সে পায়স হয় যেমন সৰ্ব্ববাদী সম্মত পায়স। এই অনুমানটী যেরূপ উপহাসজনক, পূৰ্ব্বোক্ত বৌদ্ধের যুক্তি তদপেক্ষাও অধিক। একটা জ্ঞান সন্তানের (বুদ্ধি ধারার) আশ্রয়ে থাকিয়া অনুভব, সংস্কার ও স্মৃতি ইহার কার্য্য কারণ হয়, কিন্তু সন্তান নামে যদি একটী স্থির পদার্থ থাকে তবেই ওরূপ বলা যাইতে পারে, সস্তান ( প্রবাহ ) কেবল কল্পিত ভিন্ন আর কিছুই নহে। গোময় পায়স স্থলে বরং গব্যত্বরূপ একট প্রসিদ্ধ হেতু আছে, প্রকৃত স্থলে এক-সন্তান-বৰ্ত্তিতারূপ ধৰ্ম্মটা কেবল কল্পনাপ্রস্থত, সুতরাং উক্ত দ্যায় অপেক্ষা বৌদ্ধের যুক্তি অধিক হাস্তাম্পদ ‘ সন্দেহ নাই.. বৌদ্ধের প্রদীপশিখা নদী প্রবাহ প্রভৃতি দৃষ্টান্ত দ্বারা জ্ঞানসন্তান স্থাপন করিয়া থাকে, অর্থাৎ সন্ধ্যা হইতে প্রভাত পৰ্য্যন্ত প্রতিক্ষণেই দীপশিখা