মানুষের ন্যায় চোখ বুজিয়া আছে, মুখের নিকট সুন্দর নখরসংযুক্ত একটি থাবা দর্পণের ন্যায় ধরিয়া নিদ্রা যাইতেছে। বোধ হয় নিদ্রার পূর্ব্বে থাবাটি একবার চাটিয়াছিল। যে দিকে ব্যাঘ্র নিদ্রিত ছিল, যুবা সেই দিকে চলিল। আমায় বলিল, “মাথা নত করিয়া আসুন, নতুবা প্রাঙ্গণে ছায়া পড়িবে।” তদনুসারে আমি নতশিরে চলিলাম; শেষ প্রাঙ্গণে একখানি বৃহৎ প্রস্তরে হাত দিয়া বলিল, “আসুন, এইখানি ঠেলিয়া তুলি।” উভয়ে প্রস্তরখানিকে স্থানচ্যুত করিলাম। তাহার পর যুবা একা তাহা ঠেলিয়া গর্ত্তের প্রান্তে নিঃশব্দে লইয়া গেল, একবার ব্যাঘ্রের প্রতি চাহিল, তাহার পর প্রস্তর ঘোর রবে প্রাঙ্গণে পড়িল। শব্দে কি আঘাতে তাহা ঠিক জানি না, ব্যাঘ্র উঠিয়া দাঁড়াইয়াছিল; তাহার পর পড়িয়া গেল। এ নিদ্রা আর ভাঙিল না। পর-দিবস বাহকস্কন্ধে ব্যাঘ্রটি আমার তাঁবু পর্য্যন্ত আসিয়াছিলেন; কিন্তু তখন তিনি মহানিদ্রাচ্ছন্ন বলিয়া বিশেষ কোন প্রকার আলাপ হইল না।
৪
আবার পালামৌর কথা লিখিতে বসিয়াছি; কিন্তু ভাবিতেছি এবার কী লিখি? লিখিবার বিষয় এখন ত কিছুই মনে হয় না, অথচ কিছু না কিছু লিখিতে হইতেছে। বাঘের পরিচয় ত আর ভাল লাগে না; পাহাড় জঙ্গলের কথাও হইয়া গিয়াছে, তবে আর লিখিবার আছে কী? পাহাড়, জঙ্গল, বাঘ, এই লইয়াই পালামৌ। যে সকল ব্যক্তিরা তথায় বাস করে, তাহারা জঙ্গলী, কুৎসিত, কদাকার জানওয়ার, তাহাদের পরিচয় লেখা বৃথা।
কিন্তু আবার মনে হয়, পালামৌ জঙ্গলে কিছুই সুন্দর নাই, এ কথা