পাতা:পাশাপাশি - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বঁাচা তো যায় জীবন থেকে অনেক কিছুই ছাটাই করে। বেকারদের কথা বাদ যাক, আশেপাশে কত চাকুরেরই সব রকম বাহুল্যবৰ্জিত রুক্ষ সাদা-মাঠ জীবন, কষ্টকর জীবন । অলিতে-গলিতে বস্তি কলোনিতে কত অসংখ্য মানুষ প্ৰাণপণে কোন রকমে শুধু বেঁচেই আছে। কিন্তু তার তো সে অজুহাত নেই। সামান্য হলেও মানুষের মত বঁাচার জন্য দরকারী কিছু কিছু ৰাহুল্য বজায় রাখতেই তো সে সকাল বেলা টুইসনি নিয়েছে। আনিলের একটু আনন্দ পাওয়ার দাবী সে অগ্ৰাহ করবে। কোন যুক্তিতে ? মায়া সব শুনে বলে, সত্যি। আমি অবশ্য অন্য দিক দিয়ে ভাবছিলাম। মোটামুটি আমাদের হিসাবটা দাড়াচ্ছে এক। অনিলের মেয়ে-বন্ধুটি কে জানেন ? আমাদের ছায়া । उांई नांकि ! মা আজি আগে থেকেই মেজাজ কড়া করে এসে আমায় বললে, শোন, অনিল ছায়াকে সিনেমায় নিয়ে যেতে চায়, আমরা অনুমতি দিয়েছি। তুই যেন আবার বারণ করিসনে। তোর তো সবু বিষয়েই কড়াকড়ি আর বাড়াবাড়ি। মুনীলের মনে পড়ে, রাত নটায় খালি ঘরে তার সঙ্গে রেবার গল্প করতে যাওয়া মা সমর্থন করেছিল। মায়া চিন্তিত ভাবে তাকায় -অথচ সত্যি আমি কড়াকড়ি করি না । বাড়াবাড়ি করলে কে শুনছে আমার কথা ? আপনার তবু জোর আছে, আপনার রোজগারে সংসার চলে। আমি তো সত্যি স্বাধীন নই, বাবার ছেলে নেই বলেই যেটুকু স্বাধীনতা ভোগ করছি। আমার স্বাধীনতা মানেই শেষ পৰ্য্যন্ত বাবার ইচ্ছা আর অনিচ্ছা । আমি আজ ভাবছিলাম, এ স্বাধীনতা হারাতে আমার তবে এত ভয় কেন ? বাপের চেয়ে বরং স্বামীর ওপরেই বেশী জোর খাটানো চলে । জোর থাকলে চলে বৈ কি । আমিও ঠিক তাই ভেবেছি। জোর খাটবে না। এটাই আমার আসল ভয় নয়। 2RVD.