পাতা:পাশাপাশি - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৬০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সুনীল বলে তা হতে পারে। কিন্তু রবীন্দ্ৰনাথ সম্পর্কে আপত্তিকর কথা বলেছি বললে মানে দাঁড়ায় কবিকে অপমান করেছি। সমালোচনার মতামত নিয়ে লোকের আপত্তি থাকতে পারে, সে আলাদা কথা। রবীন্দ্ৰকাব্যের নিন্দাও আমি করিনি। বস্তুবাদের সঙ্গে সংঘাতটা রবীন্দ্ৰকাব্যে কি রূপ নিয়েছে সেটা দেখাবার চেষ্টা করেছি। প্রদ্যোত বলে, ওটাই অনেকে নিন্দা বলে ধরে নিয়েছে। বস্তুবাদের সঙ্গে রবীন্দ্ৰকাব্যের সংঘাত ছিল বলতেই তাদের আপত্তি। কবিকে নাকি ছোট করা হয়। তিনি বাদ সংঘাত এসবের উদ্ধে ছিলেন । সুনীল একটু হাসে, আর কিছুই বলে না। শচীনের বয়স ষাটের কাছে গিয়েছে। কিন্তু অতটা বয়স অনুমান করা যায় না। সাধারণ হিসাবে এই বয়সের মত চুলও পাকে নি শরীরও ভাঙ্গে নি। সে বলে, আমাদের কাগজে একটা লেখা দাও না ? সুনীল বলে, আমার লেখা কি চলবে আপনাদের কাগজে ? আমি গা দাচিয়ে লিখতে পারব না । শচীনের চেয়ে বয়সে ছোট হলেও নিখিলকে বুডো দেখায়। তার চুল প্ৰায় সব পেকে গেছে, কতগুলি দাত পড়ে গেছে, মুখে শরীরের কোন স্থায়ী অসুখের ছাপ । কথাগুলি তার কিন্তু স্পষ্ট। বোধহয় বহুকাল সম্পাদকের কাজ করার ফলে । সে বলে, তুমি আমাদের কাগজ পড় না বোঝা যাচ্ছে। সুনীল সরলভাবে কথাটা স্বীকার করে বলে, কাগজটা পাই না। বাড়ীতে একটা বাংলা কাগজ রাখি, দু’তিনটে কাগজ কেনার ক্ষমতা নেই। নিখিল বলে, কাগজে যখন লেখা দিচ্ছ এবার থেকে কমপ্লিমেণ্টারি কপি পাবে। কাগজ পড়লে বুঝতে পারবে, আমরাও গা বঁচিয়ে কথা বলি না। কোনও বাদ বুঝি না, সত্য মিথ্যা ন্যায় অন্যায় উচিত অনুচিত বুঝি। সত্য কথা খাটি কথা “ফলতে ভগবানকেও কেয়ার করি না । t 8