পাতা:পাশাপাশি - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৬৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তিনমাস শুধু ঘড়ি ধরে একঘণ্টা পড়াতে এসে সুনীল দলিতমথিত করে দিয়েছে: नन्द्र शान्ने भन्म ! প্ৰথম প্ৰথম মনে হয়েছিল এটা বুঝি। সুনীলের বঁাকা কায়দা, এইভাবে তাকে বুঝি অগ্রাহ করে অবহেলা দেখিয়ে-ইংরাজী বিদ্যা আয়ত্ত করতে ছাত্রী হিসাবে তার কাছে পড়লেও তার যে একটা হৃদয় আছে সে বিষয়ে উদাসীন থেকে অবজ্ঞা জানিয়ে-তাকে কায়দা করতে চায় সুনীল । অনেকে অনেক রকম ভাবেই তো কায়দা করতে চায় তাকে । সেও কয়েকদিন খুব গম্ভীর হয়ে ছিল, অবজ্ঞা এবং উদাসীনতা দেখিয়ে ছিল। সুনীল এতটুকু ভাবান্তর দেখায় নি, শুধু প্রশ্ন করেছিল, পড়তে মন বসছে না ? শরীর খারাপ ? এসময় একদিন দু’দিন পড়াশুনা কাজ কর্ম বন্ধ রাখাই ভালো । নন্দার সাধ হয়েছিল একটা চাপড় কষিয়ে দেয়। সুনীলের গালে ! পুরুষের হৃদয়ে সাড়া জাগাবার জন্য মেয়েদের জানা বােঝা পুরানো নতুন কোন আঘাত তার মর্মের বাইরের দুয়ারেও পৌছায় না। মেয়েরা যেন মানুষ হিসাবেই তার কাছে গ্ৰাহ । মেয়ে হিসাবে সে গ্রাহাই করে না তাদের । তার পরেই মনে হত, ঠিক তাতো নয় ব্যাপার। মেয়ে বলে তাকে গ্ৰাহ করে বলেই তো তার কোনরকম মেয়েলিপণাকে প্রশ্ৰয় দেয় না। সুনীল । জব্দ হয়ে যাওয়ার মত একটা বিশ্ৰী মনোভাব নিয়ে সে হঠাৎ জিজ্ঞাসা করেছিল, দিনরাত খেটে খুটে পড়ছি, আপনিও এত কষ্ট করে পড়াচ্ছেন, ইংরাজীতে পাণ্ডিত্য দেখিয়ে আমার লাভ কি হবে ? সুনীল বলেছিল, এই তো সেদিন আপনি ইংরাজীতে পাণ্ডিত্য চেয়ে আমায় মাষ্টর রাখলেন। তিন মাস আগে । আপনার বাবার কাগজে চাকরী করবেন। বললেন। তিন মাসে উদ্দেশ্য হারিয়ে গেল আপনার ? একেবারে ভুলে গেলেন কিজান্য আমার কাছে ইংরাজী জার্নালিজম শিখছেন ?