মহৎ পরিবর্ত্তন সাধিত হইয়াছে। শকজাতির শকত্ব প্রায় লুপ্ত হইয়াছে। বিশাল শকসাম্রাজ্যের অধীশ্বর সেই জন্যই অঙ্গুলি পরিমিত স্ফাটিকাধারে নিবদ্ধ অস্থিখণ্ডের সম্মুখে নতশির হইয়াছেন। বর্ষীয়ান মহাস্থবিরের ভবিষ্যদ্বাণী সফল হইয়াছে, শকজাতি ত্রিরত্নের আশ্রয় গ্রহণ করিয়াছে, সদ্ধর্ম্মের উন্নতির দিন আসিয়াছে, নবীন গৌরব মৌর্য্যাধিকার কালের অতীত গৌরবের স্মৃতি পর্য্যন্ত লোপ করিয়াছে। শরীরনিধান হস্তে লইয়া পার্শ্ব ও অপরাপর সকলে গর্ভগৃহের বাহিরে আসিলেন। সাম্রাজ্যের প্রধান অমাত্য ও তাঁহাদিগের মহিলাগণ অস্থিখণ্ড স্পর্শ করিয়া পরিতৃপ্ত হইলেন। সম্রাটের আদেশে স্ফাটিক, সুবর্ণ ও পাষাণ নির্ম্মিত আধার যথাস্থানে স্থাপিত হইল, সশব্দে গর্ভগৃহের দ্বার রুদ্ধ হইয়া গেল; যাহারা দ্বার রুদ্ধ করিল তাহারা জানিত না যে, তাহারা চিরকালের নিমিত্ত তথাগতের শরীরনিধান মানবের দৃষ্টির বহির্ভূত করিতেছে। সম্রাটের যাত্রা সফল হইয়াছে, গর্ভগৃহের দ্বারের সম্মুখে গান্ধার হইতে আনীত নবোৎকর্ষ প্রাপ্ত যবনশিল্পের নিদর্শন, কৃষ্ণবর্ণ প্রস্তরনির্ম্মিত সুন্দর বুদ্ধমূর্ত্তি স্থাপিত হইল, যেন গর্ভগৃহের দ্বার আর কেহ স্পর্শ না করিতে পারে। ইহার পূর্ব্বে কখনও মূর্ত্তি দেখি নাই। আমাদিগের গাত্রে চিত্র আছে বটে কিন্তু মূর্ত্তি নাই। সদ্ধর্ম্মে মূর্ত্তিপূজা এই সময়ে আরব্ধ হয়। ইহার পূর্ব্বে চিত্রে চরণদ্বয় তথাগতের উপস্থিতি জ্ঞাপন করিত। সম্রাটের আদেশে স্থাপিত মূর্ত্তিটি অতি সুন্দর, অত্যন্ত প্রিয়দর্শন; তখন ভাবিতাম ইহার অপেক্ষা সুন্দর আর কিছুই নাই, হইতে পারে না, কিন্তু পরবর্ত্তী কালে মূর্ত্তিনির্ম্মাণের প্রভূত উৎকর্ষ সাধিত হইয়াছিল। যবনশিল্পী কর্ত্তৃক শিক্ষিত ভারতবাসী মূর্ত্তি-তক্ষণে অপেক্ষাকৃত পারদর্শিতা লাভ করিয়াছিল। সে সমস্ত মূর্ত্তি দেখিয়া বোধ হইত গান্ধারের মূর্ত্তিগুলি
৮৯