কণিষ্ক চলিয়া যাইবার পরে কিছু কাল নানাদিগ্দেশ হইতে শরীর গর্ভস্তূপ-দর্শন-মানসে বহুযাত্রী আমাদিগের নিকটে আসিত। শুনিয়াছি, কণিষ্কের দ্বিতীয়পুত্র হুবিষ্কের রাজত্বকালে সদ্ধর্ম্মের বিশেষ উন্নতি সাধিত হইয়াছিল; ব্রাহ্মণ্যধর্ম্মের অধিকার আর্য্যাবর্ত্তে প্রায় লুপ্ত হইয়াছিল। এই সময়ে স্তূপবেষ্টনীর চতুষ্পার্শ্বে বিত্তশালী তীর্থযাত্রীগণ কর্ত্তৃক অনেকগুলি ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র মন্দির নির্ম্মিত হইয়াছিল। তোমরা প্রাচীন স্তূপের বহির্দ্দেশে এখনও যে সমস্ত মূর্ত্তির ভগ্নাংশ দেখিতে পাও, তাহা এই ক্ষুদ্র মন্দির গুলিতে প্রতিষ্ঠিত হইয়াছিল। হুবিষ্কের মৃত্যুর পর পুনরায় সদ্ধর্ম্মের অবনতি আরব্ধ হইল; কারণ, নূতন সম্রাট বাসুদেব ব্রাহ্মণ্য ধর্ম্মের পক্ষপাতী ছিলেন। তাঁহার রাজাভিষেকের অব্যবহিত পরেই আর্য্যাবর্ত্তের সমুদায় বিহারে ও সঙ্ঘারামে বিলাপধ্বনি শ্রুত হইল; কোনও স্থানে বৃত্তির অভাবে, কোনও স্থানে বা রাজশক্তির সাহায্যের অভাবে ও ব্রাহ্মণগণের প্রতিকূলাচরণে সঙ্ঘারামগুলি ভিক্ষুশূন্য হইয়া উঠিল। বাসুদেবের অব্যবহিত পরে যে সকল কুষাণবংশীয় রাজা সিংহাসনারোহণ করিয়াছিলেন তাঁহারা নামেমাত্র সম্রাট ছিলেন। তাঁহাদের অধিকার পঞ্চনদ ব্যতীত অপর কোনও দেশে বিস্তৃত হয় নাই। ক্রমে বিশাল কুযাণ সাম্রাজ্য ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র খণ্ড রাজ্যে বিভক্ত হইয়া গেল। প্রকৃত কুষাণবংশীয়দিগের হস্তে পঞ্চনদ ব্যতীত অপর কোনও দেশের অধিকার রহিল না। ধীরে ধীরে ব্রাহ্মণ্যধর্ম্ম শক্তি সঞ্চয় করিতেছিল; এবং পৃষ্ঠপোষণের অভাবে সদ্ধর্ম্মের তদনুরূপ ক্ষতি হইতেছিল। ক্রমে স্তূপের সন্নিহিত
৯১