দিয়া বেষ্টনী সুরক্ষিত করিল। বুঝিলাম, পুণ্যক্ষেত্রে রক্তস্রোত প্রবাহিত হইবে। সূর্য্যোদয়ের পূর্ব্বে দূর হইতে হূণ অশ্বারোহিগণ অবিরাম বাণবর্ষণ করিতে আরম্ভ করিল। সুতীক্ষ্ণ ফলাযুক্ত শরাঘাতে বেষ্টনীর স্থানে স্থানে আমাদিগের গাত্র ক্ষত হইতে লাগিল, বহু পরিশ্রমলব্ধ চিত্রগুলি বিনষ্ট হইবার উপক্রম হইল; কিন্তু হূণ বা আর্য্য কোন জাতীয় সৈন্যই সে দিকে লক্ষ্য করিল না। প্রথম প্রহর অতীত হইলে হূণগণ অশ্বপৃষ্ঠে প্রথম বেষ্টনী পার হইবার চেষ্টা করিল, তখন বেষ্টনীর মধ্য হইতে সাম্রাজ্যের সৈনিকের নানাবিধ অস্ত্রবর্ষণ করিয়া তাহাদিগকে নিবারিত করিল। এইরূপে সমস্ত চেষ্টা বিফল হইলে হূণ অশ্বারোহিগণ স্তূপ হইতে কিঞ্চিৎ দূরে গমন পূর্ব্বক বিশ্রামের উদ্যোগ করিতে লাগিল। তখন দীর্ঘকায় আপাদমস্তকবর্ম্মমণ্ডিত জনৈক যুবা সৈনিক দক্ষিণ তোরণের বাহিরে আসিয়া শত্রুসৈন্যের গতিবিধি লক্ষ্য করিতে লাগিলেন। বেষ্টনীর মধ্যে হতাবশিষ্ট সৈন্যগণ বিশ্রামের আয়োজন করিতে লাগিল। তখনও দ্বিসহস্রের অধিক সৈনিক বেষ্টনীর মধ্যে বর্ত্তমান ছিল। সেনাধ্যক্ষগণ হূণগণের গতিবিধি পর্য্যবেক্ষণ করিয়া অনুমান করিলেন যে, কিৎক্ষণের জন্য যুদ্ধ স্থগিত থাকিবে। সশাখা বৃক্ষসমূহ কর্ত্তৃক তোরণদ্বার চতুষ্টয় সুদৃঢ়ভাবে রুদ্ধ করিয়া সেনাধ্যক্ষ ও সৈনিকগণ বিশ্রামার্থ স্তূপের উপরিভাগে ও পরিক্রমণের পথে শয়ন করিলেন। ক্রমে কেবল কতিপয় পদাতিক ও কয়েকটি কীরদেশীয় সারমেয় জাগিয়া রহিল। ক্রমে হূণস্কন্ধাবারে রন্ধনের অগ্নি নির্ব্বাপিত হইল, উভয়পক্ষের সেনাই সুষুপ্তিমগ্ন হইল। নিশা দ্বিপ্রহর অতীত হইল। কৃষ্ণাচতুর্দ্দশীর ঘোর অন্ধকার ভেদ করিয়া পিপীলিকার ন্যায় ধীরে ধীরে কয়েকটি নিশাচর জন্তু যেন বেষ্টনী অভিমুখে অগ্র-
১০৩