পাতা:পাষাণের কথা.djvu/১১৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

পাষাণের কথা

সর হইতেছে। নিকটে আসিলে দেখিতে পাইলাম যে, তাহারা মনুষ্য, পশু নহে। ধীরে ধীরে একে একে নিঃশব্দ পদবিক্ষেপে পঞ্চবিংশতি জন হূণসৈনিক বেষ্টনী অভিমুখে অগ্রসর হইতেছে। তখন প্রহরীদলও নিদ্রিত, ক্ষীণদেহ দীর্ঘাকার কুক্কুরগুলি বেষ্টনী রক্ষা করিতেছে। পূর্ব্ব তোরণের নিকটে আসিয়া হূণগণ নিমেষের জন্য দণ্ডায়মান হইল ও বস্ত্রাভ্যন্তর হইতে কর্পূর চূর্ণ চতুর্দ্দিকে নিক্ষেপ করিতে করিতে তোরণ অভিমুখে অগ্রসর হইল। কিন্তু কর্পূরের তীব্রগন্ধ সারমেয়গণের তীক্ষ্ণ ঘ্রাণশক্তিকে অভিভূত করিতে পারিল না, কুক্কুরগুলি তারস্বরে চীৎকার করিয়া উঠিল। রক্ষিগণ নয়ন উন্মীলন করিয়া দেখিল যে, দুইজন হূণ আলম্বনের উপর উঠিয়াছে। তাহারা তৎক্ষণাৎ তাহাদিগকে শরাঘাতে নিহত করিল। অকস্মাৎ বাধা প্রাপ্ত হইয়া হূণসৈনিকগণ শৃঙ্গনিনাদ করিল। দূর হইতে শৃঙ্গরবে তাহার উত্তর আসিল। দুরে হূণশিবিরে শত শত উল্কা প্রজ্বলিত হইয়া উঠিল। তখন সাম্রাজ্যের সৈনিকগণ চেতনা লাভ করে মাই। বজ্রের ন্যায় অবশিষ্ট হূণবাহিনী আসিয়া বেষ্টনী আক্রমণ করিল ও পরক্ষণেই বাধা প্রাপ্ত হইয়া শত হস্ত পিছাইয়া গেল। এইরূপে বার বার আক্রান্ত হইয়াও সাম্রাজ্যের সৈনিকগণ অত্মসমর্পণ করিল না। যুদ্ধ শেষ হইবার পূর্ব্বে পূর্ব্বদিকে আলোক দৃষ্ট হইল, সাম্রাজ্যের সৈনিকগণ জয়ধ্বনি করিয়া উঠিল। হূণগণ পুনরায় বেষ্টনী আক্রমণ করিল। যখন আলম্বনের উপরিভাগে যুদ্ধ চলিতেছিল, তখন কতিপয় হূণসৈনিক তৈলসিক্ত বস্ত্রখণ্ডের সাহায্যে বৃক্ষকাণ্ডগুলিতে অগ্নিসংযোগ করিবার চেষ্টা করিতেছিল। এইরূপে প্রভাতের আক্রমণ শেষ হইবার পূর্ব্বেই বেষ্টনীর চতুর্দ্দিকে ভীষণ অগ্নি প্রজ্বলিত হইয়া উঠিল। তখন বেষ্টনীর মধ্যে অবস্থান করা

১০৪