পাতা:পাষাণের কথা.djvu/১২১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পাষাণের কথা

নগরীর রক্ষাকল্পে আত্মোৎসর্গ করিয়াছেন। স্থাণুদত্তের বামপার্শ্বে তাহার কনিষ্ঠ পুত্ত্র প্রতিষ্ঠান নগরীর অধিষ্ঠানাধিকরণ বিচারপতি নাগদত্ত। অপুত্ত্রক নাগদত্ত বৃদ্ধ পিতার ক্লেশ, জ্যেষ্ঠের মানসিক ও শারীরিক অবস্থা দেখিয়া আকুল, হরি দত্তের বিয়োগজনিত অশ্রু তখনও শুষ্ক হয় নাই। লৌহনির্ম্মিত ত্রিশূলে ভর দিয়া স্থাণুদত্ত অগ্রসর হইলেন। শিরস্ত্রাণবিহীন যুবককে দেখিয়া তাঁহার মুখমণ্ডল উদ্দীপ্ত হইয়া উঠিল। তিনি “মহারাজ” মাত্র উচ্চারণ করিয়া নির্ব্বাক হইলেন। এই সম্বোধনে স্কন্দগুপ্ত চমকিত হইয়া উঠিলেন।

 ধীরে ধীরে তনুদত্ত সকল কথা বিবৃত করিলেন, কুমারগুপ্ত ইহধাম পরিত্যাগ করিয়াছেন, বালক পুরগুপ্ত নামে মাত্র সম্রাট; যুবতী বিধবা মজ্জনোন্মুখ তরণীর কর্ণধার, কিন্তু দ্বিতীয় চন্দ্রগুপ্তের অলৌকিক শিক্ষার ফলে দামোদরশর্ম্মা ও গোবিন্দগুপ্ত নতশিরে আজ্ঞানুপালন করিতেছেন। বৃদ্ধ দামোদরশর্ম্মা দুশ্চরিত্রা মহিষীর বিলাস ব্যসনের ব্যয় বহন করিবার জন্য প্রজাপীড়ন করিতেছেন, অর্দ্ধভুক্ত অস্ত্রবিহীন সেনাদল লইয়া গোবিন্দগুপ্ত মগধরক্ষায় নিযুক্ত আছেন। নতজানু হইয়া তিন পিতাপুত্ত্র ভিখারীকে সম্রাট বলিয়া অভিবাদন করিলেন, ভগ্নস্বরে স্থাণুদত্ত কহিলেন, “সমুদ্রগুপ্তের নীতি অনুসারে সম্রাজ্যের যাহা অবশিষ্ঠ আছে আপনি তাহার অধীশ্বর। বংশ লোপ হইয়াছে, তথাপিও জীবনের শেষ মুহূর্ত্ত পর্য্যন্ত সাম্রাজ্যের কার্য্য করিতে প্রস্তুত আছি। নাগদত্ত প্রতিষ্ঠান রক্ষা করিবে, একহস্ত পুত্ত্র ও অশীতিপর পিতা ছায়ার ন্যায় সম্রাটের অনুসরণ করিবে। মহারাজ, এই শীর্ণ দুর্ব্বল হস্তে মহাভার গরুড়ধ্বজ

১০৯