পাতা:পাষাণের কথা.djvu/১২৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পাষাণের কথা

করিত, এতদ্ব্যতীত তাহার আর কোন কথাই বুঝিতাম না। অপরাহ্ণে বৃদ্ধ আহার্য্য সংগ্রহের চেষ্টায় বন মধ্যে প্রবেশ করিত, বনজাত ফলেই তাহার আহার নিষ্পন্ন হইত, কিন্তু কখনও কখনও সে পত্রনির্ম্মিত আধারে দুগ্ধবৎ শ্বেতবর্ণ পদার্থ সংগ্রহ করিয়া আনিত। বোধ হয়, দুগ্ধ সংগ্রহের জন্য সে বন পথ অতিক্রম করিয়া দূরবর্ত্তী গ্রামমধ্যে প্রবেশ করিত। এইরূপে শীতের পর গ্রীষ্ম, গ্রীষ্মের পর বর্ষা অতীত হইয়া গেলে, ক্রমে ক্ষুদ্র বট ও পিপ্পল বৃক্ষ গুলি নাতিবৃহৎ ছায়াপ্রদ তরু হইয়া উঠিল। বৃদ্ধ আমাদিগের সহিত শান্তিতে কালাতিপাত করিতে লাগিল।

 তোরমাণের পুত্ত্র মিহিরকুলের অধীনে হূণগণ দ্বিতীয়বার যুদ্ধযাত্রায় নির্গত হইতেছিল। গঙ্গাপ্রবাহের ন্যায় অবিরাম গতিতে হূণগণ জার্য্যাবর্ত্তে প্রবেশ করিতেছিল, তোরমাণের মৃত্যুর পর হইতে হূণ জাউলগুলি উপযুক্ত নেতার অভাবে ইতস্ততঃ বিক্ষিপ্ত হইয়া পড়িতেছিল। মিহিরকুলের চেষ্টায় তাহার অধিকাংশ পুনরায় একত্রিত হইল। হূণবাহিনী মগধাভিমুখে অগ্রসর হইল। দ্বিতীয় বাহিনী মিহিরকুলের কনিষ্ঠ খিঙ্গিলের অধীনে জনহীন মরু অতিক্রম করিয়া সৌরাষ্ট্রাভিমুখে ধাবিত হইল; বাত্যাহত কদলীবৃক্ষের ন্যায় নগরশীর্ষের গরুড়ধ্বজ ধরাশায়ী হইল। কালিন্দী অতিক্রম করিয়া মিহিরকুল ব্রক্ষাবর্ত্তে শিবির স্থাপন করিলেন। বৃদ্ধ সম্রাট দ্রুতবেগে অগ্রসর হইয়াও বারাণসী অতিক্রম করিতে পারেন নাই। ব্রহ্মাবর্ত্তে তনুদত্ত ও প্রতিষ্ঠানে নাগদত্ত সীমান্তরক্ষায় ব্যাপৃত ছিলেন। সিংহবিক্রম স্থাণুদত্তের পুত্ত্র ভাগীরথীর তীর্থ রক্ষা করিতেছিলেন; জলধিতুল্য হূণ সৈন্যের পরপারে পদার্পণ করিবার সাহস হইতেছিল না। আর প্রতিষ্ঠানে নাগদত্ত

১১৫