পাষাণের কথা
নৌবাটক লইয়া বেণীত্রয় রক্ষা করিতেছিলেন। সম্রাট্ চরণাদ্রিদুর্গে সৌরাষ্ট্রের পতনসংবাদ প্রাপ্ত হইলেন; আরও শুনিলেন, আনর্ত্তের সহিত মালবও সাম্রাজ্যের দেহ হইতে বিচ্ছিন্ন হইয়াছে। শুনিয়া বৃদ্ধের শির নত হইল। চরণাদ্রিশিখরে দণ্ডায়মান হইয়া জাহ্নবীকে সাক্ষী করিয়া, তরবারি স্পর্শ করিয়া, বৃদ্ধ শপথ করিলেন, মালব ও আনর্ত্ত, মৎস্য ও মরু পুনরধিকার না করিয়া পাটলিপুত্রে প্রত্যাগমন করিবেন না। শপথশ্রবণে বিজ্ঞ সেনানীগণেরও হৃদয় কম্পিত হইল। স্কন্দগুপ্ত আর একবার প্রতিজ্ঞা করিয়াছিলেন। চরণাদ্রিদুর্গে, খুল্লতাত গোবিন্দগুপ্তের মৃতদেহ স্পর্শ করিয়া যুবক সম্রাট্ শপথ করিয়াছিলেন যে, তাঁহার বংশে কেহ কখনও মগধের সিংহাসন রক্ষার জন্য বিবাদ করিবে না। শান্তনুপুত্রের ন্যায় ভীষণ প্রতিজ্ঞা রক্ষার জন্য সম্রাট দারপরিগ্রহ করেন নাই। উদ্দণ্ডপুরদুর্গে অবরুদ্ধ হৃতসিংহাসন পুরগুপ্ত মগধসিংহাসনের ভাবী উত্তরাধিকারী। চরণাদ্রি হইতে সৌরাষ্ট্র বহুদিনের পথ, মগধে যাহারা স্ত্রীপুত্ত্র রাখিয়া আসিয়াছিল তাহারা প্রত্যাবর্ত্তনের আশা পরিত্যাগ করিল। সম্রাট্ চরণাদ্রি হইতে প্রতিষ্ঠানাভিমুখে অগ্রসর হইলেন।
মিহিরকুলের আহ্বানে প্রতিদিন শত শত হূণ আর্য্যাবর্ত্তে প্রবেশ করিতেছিল। তাহাদিগের আক্রমণে গান্ধারে শত শত বর্ষব্যাপী কুষাণাধিকার লুপ্ত হইল, কণিষ্কের সাম্রাজ্যের শেষ চিহ্ণও আর্য্যাবর্ত্ত হইতে লুপ্ত হইয়া গেল। গঙ্গাতীরে প্রতিদিন হূণগণের বলবৃদ্ধি পাইতে লাগিল, সৈন্য সংখ্যার উপর নির্ভর করিয়া মিহিরকুল পুনরায় নদী পার হইবার আদেশ দিলেন; বহুচেষ্টা সত্ত্বেও তনুদত্ত সে ভীষণ আক্রমণ রোধ করিতে পারিলেন না, ধীরে ধীরে পশ্চাৎপদ হইয়া ত্রিবেণীতে আসিয়া উপস্থিত হইলেন। সম্রাট প্রতিষ্ঠানে উপস্থিত হইয়া ব্রহ্মাবর্ত্তের
১১৬