পাতা:পাষাণের কথা.djvu/১৩৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

পাষাণের কথা

ভাবেন নাই যে, অবশিষ্ট শত্রুসৈন্য তাঁহার গ্রাস অতিক্রম করিবে। রোষে উন্মত্ত হইয়া তিনি স্বয়ং অবশিষ্ট সৈন্যগণের প্রতি সৈন্যচালনা করিতে লাগিলেন। তখন মরণোন্মুখ অশ্ব পরিত্যাগ করিয়া পরশু হস্তে স্কন্দগুপ্ত যমুনার আর্দ্রসৈকতে হূণরাজের সম্মুখীন হইলেন। দুর্গপ্রাকার হইতে ত্রিহস্ত পরিমিতি শর আসিয়া বৃদ্ধের দক্ষিণ চক্ষু ভেদ করিয়া মস্তিষ্ক স্পর্শ করিল। তাঁহার দক্ষিণ হস্তে উত্তোলিত দীর্ঘপরশু সেই সময়ে হূণরাজের অশ্বের মস্তক ছেদন করিল। অশ্বহীন মিহিরকুল ও সম্রাট স্কন্দগুপ্তের প্রাণহীন দেহ একত্র বালুকাময় ভূমিতে লুণ্ঠিত হইল। সম্রাটের অবশিষ্ট সৈনিকগণ ভট্টারকের দেহ রক্ষার্থ একত্রিত হইল, তখন অবশিষ্ট সেনাদল পরপারে উপস্থিত হইয়াছে। হূণগণ প্রচণ্ড বিক্রমে মিহিরকুলকে উদ্ধার করিবার জন্য শত্রুসেনা আক্রমণ করিল। দেখিতে দেখিতে প্রভুভক্ত সৈন্যদল সম্রাটের দেহ আচ্ছন্ন করিয়া ভূপতিত হইল, দূরে দাঁড়াইয়া স্তব্ধ নেত্রে তোরমাণের পুত্ত্র প্রতিষ্ঠানের শেষ যুদ্ধ অবলোকন করিলেন। সম্রাটের একজন মাত্র সৈনিক অবশেষে মৃত সম্রাটের হস্ত হইতে সুবর্ণনির্ম্মিত গরুড়ধ্বজ গ্রহণ করিয়া জলে ঝম্প প্রদান করিল। হস্তোত্তোলন করিয়া হূণরাজ তাহার প্রতি শর নিক্ষেপ করিতে নিষেধ করিলেন। আর্য্যাবর্ত্তের ইতিহাসে তাহার নাম সুপরিচিত। সেই ব্যক্তি আর্য্যাবর্ত্তের ত্রাণকর্ত্তা—যশোধর্ম্মদেব।

 বৃদ্ধ প্রভাতে বনমধ্যে পুষ্পচয়ন করিতে গিয়াছিলেন; দেখিলেন, ক্ষতবিক্ষত দেহে মলিনবেশপরিহিত দীর্ঘাকার এক যোদ্ধা বৃক্ষতলে অচেতন অবস্থায় পতিত। তাহার পার্শ্বে বৃহৎ লৌহনির্ম্মিত শূল, কিন্তু তাহার দক্ষিণহস্তে গরুড়শীর্ষ সুবর্ণদণ্ড দৃঢ়মুষ্টিনিবদ্ধ রহিয়াছে, চেতনা অপহৃত<!— দাঁড়ি বসাবেন না। —>

১২২