পাতা:পাষাণের কথা.djvu/১৪৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

পাষাণের কথা

অনুগাঙ্গপ্রদেশে ও মগধে গুপ্তরাজগণ যশোধর্ম্মদেবের অনুগ্রহপ্রার্থী। বৃদ্ধ আসিয়া একে একে তোরণের সমস্ত স্তম্ভগুলি পরীক্ষা করিয়া শ্রমজীরিগণকে মৃত্তিকা খননে নিযুক্ত করিলেন। বহু শতাব্দী পরে প্রাচীন পরিক্রমণের পথ সূর্য্যালোক দর্শন করিল; ক্রমে স্তূপের অর্দ্ধবৃত্তাকৃতি নয়নগোচর হইল। ধীরে ধীরে বহুযত্নে শ্রমজীবিগণ পাষাণের উপর পাষাণ রক্ষা করিয়া মণ্ডলাকারে পাষাণসজ্জা করিল। আমি উৎসুকনেত্রে দেখিতেছিলাম; ভরসা করিয়াছিলাম যে, ইহারা গর্ভগৃহের অনুসন্ধানে প্রবৃত্ত হইবে ও তথাগতের শরীর-নিধান উদ্ধার করিতে সমর্থ হইবে। কিন্তু বোধ হয় মনুষ্যলোকে সেকথা বহুদিনলুপ্ত হইয়াছিল। বহুকাল পরে বিদেশীয় যাত্রিদলকে ভণ্ড শ্রমণগণ স্বরচিত উপাখ্যান শ্রবণ করাইত ও বলিত, “কণিষ্ক রাজার তনুত্যাগের দিন ইন্দ্রদেবতা আসিয়া মস্তকে শরীর-নিধান বহন করিয়া তুষিতস্বর্গে লইয়া গিয়াছেন ও ব্রহ্মা তাহার উপর ছত্র ধারণ করিয়া গিয়াছেন।” নিরীহ, ধর্ম্মপ্রাণ, সরলস্বভাব বিদেশীয়গণ শ্রমণগণের মিথ্যাবাক্যে আস্থা স্থাপন করিয়া সেই কথা লিপিবদ্ধ করিয়া গিয়াছেন। শুনিয়াছি, তোমরাও সেই বৃত্তান্তে আস্থা স্থাপন করিয়া গ্রন্থরচনা করিয়া থাক। আমি যাহা ভরসা করিয়াছিলাম, তাহা হইল না; ক্ষুদ্র বৃহৎ পাষাণখণ্ডসমূহ লইয়া স্তূপ নির্ম্মিত হইল। নির্ম্মাণকালে সর্ব্ববিধ পাবাণ এমন কি ভগ্ন মূর্ত্তিসমূহও স্তূপের উপরিভাগে সজ্জিত হইয়াছিল। কণিষ্কনির্ম্মিত রাজপথ আচ্ছাদনের দুই একখণ্ড প্রস্তরও তাহার মধ্যে ছিল। এই নিমিত্তই তোমরা কণিষ্কের নামাঙ্কিত পাষাণ স্তূপের অর্দ্ধবর্ত্তুলাকার পিণ্ডমধ্যে প্রাপ্ত হইয়াছিলে। স্তূপ সংস্কৃত হইল বাট, কিন্তু বেষ্টনী বা তোরণ সমূহের সংস্কার হইল না। স্তূপের চারিটি তোরণের সম্মুখে হরিদ্রা

১৩২