পাতা:পাষাণের কথা.djvu/১৪৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

পাষাণের কথা

দেখিয়াছি বলহীন, ক্ষীণ, ক্ষুদ্রদেহ, ক্ষুদ্রচেতা কুটিলমতি মানব। তাহাদিগকে দেখিয়া মনে স্বতঃই ঘৃণার উদ্রেক হইয়াছে। এখন দেখিতেছি, অধঃপতনের শেষ সোপানে দণ্ডায়মান হইয়া আর্য্যাবর্ত্তবাসিগণ মুহূর্ত্তের জন্য আত্মরক্ষার চিন্তা করে নাই। তখন জগতে কোন প্রকার উত্তেজনাই তাহাদিগকে উত্তেজিত করিতে পারিত না। শাক্যের ধর্ম্ম, ব্রাহ্মণের ধর্ম্ম তাহাদিগের নিকট সমান হইয়াছে; উন্নতির চেষ্টা বহুদিন শেষ হইয়াছে; তখন ধর্ম্মের নাম স্বার্থসাধন, সঙ্ঘের নাম কামাচার ও বুদ্ধের নাম বিশ্বাসঘাতকতা; তখন ব্রাহ্মণের ইজ্যার নাম অর্থশোষণ, অধ্যয়নের নাম স্বার্থসাধন ও দানের নাম পরস্বাপহরণ হইয়াছে। ধীরে ধীরে ব্রাহ্মণগণের চেষ্টায় পরিবর্ত্তন হইয়াছিল, নিঃশব্দে জগতকে জানিতে না দিয়া, ধীমান ব্রাহ্মণগণ প্রাচীন সরল ধর্ম্ম দৃঢ়ভিত্তির উপর স্থাপন করিয়াছিলেন। আবার তাঁহাদিগেরই বংশধরগণ স্বার্থসাধনের জন্য দৃঢ় ভিত্তি ক্ষয় করিয়া ভবিষ্যৎ বিনাশের পথ মুক্ত করিয়া দিয়াছে। ভবিষ্যতের প্রতি দৃষ্টি নিক্ষেপ কর; দেখিতে পাইবে, এ ব্যবস্থা স্থায়ী হয় নাই, ধীরে ধীরে মিথ্যার গ্রন্থি শিথিল হইয়াছে,—সত্য প্রকাশিত হইয়াছে। সদ্ধর্ম্ম আর্য্যাবর্ত্ত হইতে দূরীভূত হইয়াছে সত্য, কিন্তু তাহার সহিত আর্য্যাবর্ত্তের কি দশা হইয়াছে? সত্য আবহমানকাল সত্যই রহিয়াছে, কখনও দীর্ঘকাল মিথ্যার আবরণে আচ্ছাদিত থাকে নাই। দূরে দৃষ্টি নিক্ষেপ কর, সদ্ধর্ম্মের ছায়ামাত্র বর্ত্তমান আছে, শাক্যরাজকুমারের সরল বিশ্বাসের ধর্ম্ম অতীতে বর্ত্তমান নাই। যাহা আছে, তাহা কি সদ্ধর্ম্ম? তথাগতের মহাপরিনির্ব্বাণের পর যে সকল মহাস্থবির সেই সুসমাচার জগতে ঘোষণা করিয়াছিলেন তাঁহারা ফিরিয়া আসিলে কি সদ্ধর্ম্মের নামে প্রচলিত ছায়া চিনিতে পারিবেন? নিজ মনে অন্বেষণ

১৩৬