পাতা:পাষাণের কথা.djvu/১৫৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

পাষাণের কথা

অনুচরমণ্ডলী বেষ্টনীর বহির্দ্দেশে আসিয়া ভিক্ষুগণের সহিত মল্লযুদ্ধের উদ্যম করিল। কোলাহল শুনিয়া রাজপুরুষগণ আসিয়া উপস্থিত হইলেন ও সৈনিকগণের সাহায্যে মহিলা ও তাঁহার অনুচরদিগকে দূর করিয়া দিলেন। চক্রমধ্যে উপবিষ্ট বোধিসত্ত্ব ইহাতে বিশেষ আপত্তি প্রকাশ করিতেছিলেন, কিন্তু তাঁহার চক্ররূপ দুর্গমধ্যে কেহই প্রবেশ করিতে সাহসী হইল না ও ক্রমে শান্তি সংস্থাপিত হইল। বেষ্টনীর বহির্দ্দেশে পূর্ণ মাত্রায় উৎসব চলিতেছিল; শিষ্যমণ্ডলী ও মহাশক্তিগণ শৌণ্ডিকগণের বিপণী হইতে অনবরত মধুর কলস স্তূপমধ্যে বহন করিতেছিলেন, কখন কখনও নাগরিকগণকে সাহায্য করিবার জন্য বিপণীমধ্যে আশ্রয় গ্রহণ করিয়া রন্ধন ও বিশ্রামের চেষ্টা করিতেছিলেন, তাঁহাদিগের সমভিব্যাহারী প্রতীহার ও রক্ষীদল শান্তিরক্ষা করিতেছিল; ভিক্ষু বা শক্তিগণকে তাঁহাদিগের নিকটে গমন করিতে দিতেছিল না।

 প্রথম প্রহর অতীত হইলে সম্রাট স্তূপাভিমুখে অগ্রসর হইলেন; শৃঙ্গ ও তুর্য্যনিনাদে জনসঙ্ঘ বধির হইল, ক্ষণেকের জন্য উৎসবস্রোত রুদ্ধ হইল। সৈনিকগণ জনস্রোত রুদ্ধ করিয়া পথ পরিষ্কার করিল; শ্বেত কৌষেয় বস্ত্র পরিহিত সম্রাট ও যুবরাজ বেষ্টনীর দ্বারে উপনীত হইলেন, নতজানু হইয়া কাষায়পরিহিত ভিক্ষুগণকে অভিবাদন করিলেন। তখন তাঁহারা পুরোবর্ত্তী হইয়া বেষ্টনীমধ্যে প্রবেশ করিলেন। প্রাচীন রীতি অনুসারে স্তূপার্চ্চন ও পরিক্রমণ সমাপ্ত হইলে সম্রাট-বেষ্টনী হইতে বহির্গত হইয়া ভিক্ষুগণের সহিত প্রস্থান করিলেন। অর্চ্চনা শেষ হইলে বুদ্ধ ও বোধিসত্ত্বগণ দেখিলেন যে, নবাগত ভিক্ষুগণ দক্ষিণ প্রার্থনা করিলেন না। তাঁহারা আশা করিয়াছিলেন যে, স্তূপার্চ্চনা শেষ হইলে সম্রাট নাগরিকগণের ন্যায় তাঁহাদিগেরও অর্চ্চনা করিবেন। সম্রাট বেষ্টনী

১৪৪