পাতা:পাষাণের কথা.djvu/১৬৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

পাষাণের কথা

প্রভাব ধ্বংস করিয়াছিলেন; গুপ্তবংশের কন্যা বিবাহ করিয়া জয়বর্দ্ধন ধন্য হইয়াছিলেন; রাজ্যবর্দ্ধনের প্রতাপে পর্ব্বতরাজের হিমানীমণ্ডিত শিখরে বসিয়া কাম্বোজরাজ ভয়ে কম্পিত হইতেন; পুরুষপুর হইতে কামরূপনগর পর্য্যন্ত, হিমবানের পাদমূল হইতে নর্ম্মদাতীর পর্য্যন্ত হর্ষবর্দ্ধনের অধিকার বিস্তৃত হইয়াছিল; পর্ব্বতরক্ষিত আটবিক প্রদেশ তথনও উত্তরাপথ রাজ্যের অধীনতা স্বীকার করে নাই। কান্যকুব্জ হইতে সম্রাট দূত প্রেরণ করিয়াছেন, তাঁহার উদেশ্য দক্ষিণকোশলে তীর্থযাত্রায় নির্গত হইবেন। সম্রাটের দূত ভগ্নগৃহে দর্ভশয্যায় আসনগ্রহণ করিয়া আটবিক প্রদেশের মুকুটবিহীন সম্রাটের সম্মুখীন হইয়াছেন। সুবর্ণগৌরকান্তি শুভ্রজটামণ্ডিতশীর্ষ ছিন্ন গৈরিকপরিহিত মঠাধ্যক্ষ কুশাসনে বসিয়া রাজদূতের সহিত কথোপকথন করিতেছেন। মঠবাসিগণকে দেখিয়া রাষ্ট্রনীতিকূটকুশল রাজকর্ম্মচারী বিস্মিত হইয়াছেন, তাঁহার মনে সন্দেহের পরিবর্ত্তে ভক্তির উদ্রেক হইয়াছে। প্রভাতে আমার পার্শ্বে দণ্ডায়মান হইয়া আমার শীর্ষে হস্তস্থাপন করিয়া স্থবির মঠাধ্যক্ষ বলিতেছেন, “মহাত্মন্, আমাদিগের সহিত ছলনার আবশ্যকতা নাই, আর্য্যাবর্ত্ত-রাজের বিজিগীষা পরিতৃপ্ত হয় নাই, বিস্তৃত উত্তরাপথ তাঁহার রাজ্যলাভেচ্ছা পূর্ণ করিতে সমর্থ হয় নাই। ভিক্ষোপজীবী সন্ন্যাসীর সহিত ছলনার প্রয়োজন নাই। আটবিক প্রদেশ ও দক্ষিণাপথের প্রতি হর্ষের দৃষ্টি আকৃষ্ট হইয়াছে, তাহা আমরা পূর্ব্বেই অনুভব করিয়াছি। দেবাদিদেবের পরিচর্য্যায় গুরুপরম্পরায় শতাধিক বর্ষ এই বনমধ্যে অতিবাহিত হইয়াছে, মহেশ্বরের অনুকম্পায় বর্ব্বরগণ শান্ত ও শিক্ষিত হইয়াছে। প্রাচীন কোশল রাজ্যের উর্ব্বর ভূমি বহুরত্নপ্রসবিনী, উত্তরাপথ ও দক্ষিণাপথ রাজগণের লোলুপ দৃষ্টি বহুকাল হইতে ইহার উপর নিবদ্ধ হইয়াছে। আমার পূর্ব্ববর্ত্তিগণ তাহা অনুভব

১৫২